ভারতে নিম্নবর্ণের দলিত সম্প্রদায়ের ‘ভারত বন্ধ’ আন্দোলনে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিভিন্ন রাজ্যে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অনেকে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের বিরদ্ধে সোমবার দলিতদের বেশ কয়েকটি সংগঠন এই আন্দোলনের ডাক দেয়।
গত ২০ মার্চ দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর নির্যাতন বন্ধের যে আইন রয়েছে, তা সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই রায়ের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদের ঝড় তোলে দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন। সোমবার হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ডাক দেয় ভারত বন্ধ কর্মসূচির। এক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি রাজ্যে তাদের আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়।
এনডিটিভি জানায়, সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। এখানে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এক ছাত্রনেতাসহ ৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৬ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সেখানে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে বিক্ষোভকারীরা রেললাইন অবরোধ করে ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। রেললাইন অবরোধ করায় বিহার, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের কয়েকটি এলাকায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় মহাসড়কও অবরোধ করা হয়েছে।
সংঘর্ষে পাঞ্জাবে একজন নিহত হয়েছে। পাঞ্জাব সরকার নিরাপত্তার জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণাসহ বোর্ড পরীক্ষা স্থগিত করে। এছাড়া রাত ১১টা পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জালান্দর, কাপুরথালা, নাওয়ানশাহর এবং হোশিয়ারপুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এই কয়েকটি শহরেই যেখানে সবচেয়ে বেশি দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের বাস।
রাজস্থানের জয়পুর, বার্মার ও আলওয়ারে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আলওয়ারে নিহত হয়েছে একজন। ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রনচিতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জ করেছে।
নিহতদের মধ্যে একজন উত্তর প্রদেশের। এখানকার মেরুত শহরে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সঙ্গেও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা হাপুরে সড়ক অবরোধ করলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাদের শান্ত হতে বলেন।
যোগী আদিত্যনাথ বলেন, নিম্নবর্ণের সম্প্রদায়ের লোকদের ভালোর জন্য আমরা কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কাজ করছি।
ইতোমধ্যে ভারত সরকার এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য কোর্টের কাছে আবেদন করেছে।
এছাড়া প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল দলিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে এনডিএ’র আইনজীবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন।