চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
নির্মাণে জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার এলাকাবাসীর সঙ্গে
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে চার জন।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় বাঁশখালী থানায় তিনটি পৃথক পৃথক মামলা হয়েছে। যার দুইটি করেছেন নিহতদের পরিবার এবং একটি মামলা করেছে পুলিশ। অন্তত আড়াই হাজার জনকে আসামী করা হয়েছে এসব মামলায়।
নিহত জাকের হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম এজাহারে কারো নাম উল্লেখ না করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। নিহত আনোয়ারুল ইসলাম ও মরতুজা আলীর ভাই মওলানা বশির আহমেদ বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ১৪ থেকে ১৫ শ’ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে ছয়জন আসামির মধ্যে বসতভিটা ও গোরস্থান রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক লিয়াকত আলীও রয়েছেন।
অন্যদিকে বাঁশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বাহার মিয়া বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের অভিযোগে ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা এক হাজার জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন। তবে এঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।
বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মী, পুলিশ ও আনসারের সাথে এলাকাবাসীর ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা ঘটে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামশুজ্জামান ৪ জন নিহতের কথা জানালেও এলাকাবাসীর দাবী নিহত হয়েছে ৭ জন।
কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে ঘিরে বাঁশখালীতে পক্ষে বিপক্ষে এলাকাবাসী দুগ্রুপে বিভক্ত হয়ে সোমবার একই জায়গায় সমাবেশের ডাক দেয়। এতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ, আনসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এলাকাবাসী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তাদের উপর হামলা চালায়।
এ সময় পুলিশ ব্যাপক গুলিবর্ষণ করে। আহতদের হাসপাতালে আনার পথে ৩ জন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়ার পর আরো ১ জন মারা যায়।
বাঁশখালী থানার ওসি সহ ১৫ পুলিশ ও ৭ এলাকাবাসীকে বাঁশখালী হাসপাতালে এবং গুরুতর আহত ৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।