আগামী অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের আয়কর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল আব্দুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে এই প্রস্তাব করেন তিনি।
তবে পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, এতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাবেন। ফলে কর্মসংস্থান কমে যাবে। তাই এটাকে পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
তৈরি পোশাক প্রস্তত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ নাছির (অর্থ) চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু উল্টো বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে উদ্যোক্তা আগ্রহ হারাবেন। ফলে বিনিয়োগ কমে যাবে। ফলে কর্মসংস্থান বাড়বে না। কর যত কম হবে উদ্যোক্তারা ততবেশি বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।
‘তবে আশাকরি বাজেট পাশ হওয়ার সময় এটাকে পুন:বিবেচনা করা হবে। সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে।’
বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিতে নিয়োজিত সাধারণ কারখানার করহার ১৫ শতাংশ ও তৈরি পোশাকের তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে বর্তমানে একক আয়কর হার ১২ শতাংশ রয়েছে।
এছাড়া পরিবেশসম্মত ভবন সনদ (গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন) আছে এমন সবুজ কারখানার আয়কর হার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
মুহিত বলেন, দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তৈরি পোশাক খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে তৈরি পোশাক খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে এ খাতকে বিশেষ কর সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক খাতের পণ্যের রপ্তানি মূল্যের উপর উৎসে করহার চলতি বছরের মতোই দশমিক ৭ শতাংশ বহাল রাখা হয়েছে।
কিন্তু বাজেটে অন্তত ৩ বছরের জন্য তৈরি পোশাক খাতে উৎসে কর বাতিলের দাবি জানিয়েছিল বিজিএমইএ৷ গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) বাজেটে উৎসে কর ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও পরে বিজিএমইএর অনুরোধে তা শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়।
বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প কারখানায় বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্পে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারনানা উদ্যোগ নিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং কারখানা মালিকদের সমন্বয়ে প্রণীত ত্রিপক্ষীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় মোট ৩ হাজার ৭৮০টি পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা মূল্যায়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এছাড়া ৩ হাজার ৭৪৩টি রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের তথ্য সন্নিবেশিত করে পাবলিকলি অ্যাক্সেসিবল ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। আরো ২৭ হাজার কারখানার ডাটাবেইজ তৈরির কাজ চলছে।
‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ নাম দিয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য (২০১৮-১৯) ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এ বাজেটের আকার বাড়ছে মাত্র ৬৮ হাজার কোটি টাকা। নির্বাচনী বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।