পাকিস্তানের আগামী সাধারণ নির্বাচনের জন্য ‘যৌথ কৌশল’ গঠনে একমত হয়েছে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম-সামি (জেইউআই-এস)।
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং জেইউআই-এস প্রধান মৌলানা সামিউল হকের উপস্থিতিতে দল দুটির নেতারা এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
রোববার পিটিআই-এর গণমাধ্যম শাখার এক বিবৃতিতে এখবর জানানো হয়।
ডন জানায়, জেইউআই-এস প্রধান মৌলানা সামিউল হক ‘তালেবানের জনক’ বলেও পরিচিত। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে পাকিস্তান সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। মাঝে ছয় বছরের বিরতিতে ১৯৮৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। তালেবানের সাবেক সুপ্রিম কমান্ডার ও আধ্যাত্মিক নেতা মোল্লা ওমরের সাথে ছিলো তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ‘হেড অব দ্য সুপ্রিম কাউন্সিল’ পদবী নিয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ডি ফ্যাক্টো নেতা ছিলেন ওমর।
২০১৩ সালের মার্চে সামিউল হক এক নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেন। যেখানে রাষ্ট্রের সকল শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে সুন্নি মুসলিমদের নিযুক্ত করার অঙ্গীকার ছিলো সহশিক্ষা বাতিলের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক সকল মুসলিমদের জিহাদের প্রশিক্ষণের কথাও বলেছে তারা।
পিটিআই ও জেইউআই-এস এর নেতারা বৈঠকটিতে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। অব্যাহত আলোচনা ও যোগাযোগের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই আরও কাছাকাছি আসতে চায় তারা।
পিটিআই নেতা ও খাইবার পাথতুনখাওয়ার মূখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাট্টাক, তথ্যমন্ত্রী শাহ ফরমান, মৌলানা হামিদুল হক হাক্কানি এবং মৌলানা সাইদ সামার ইউসুফ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “বৈঠকে দুই দলের নেতারা আগামী নির্বাচনের জন্য একটি যৌথ কৌশল প্রণয়নে আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন, যাতে তারা দেশের বর্তমান সঙ্কট ও জটিলতা থেকে উত্তরণে যৌথভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে।”
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পিটিআই প্রধান ও পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইমরানের। তার মতে, দুর্নীতি নির্মুল ছাড়া দেশের কোন উন্নতি করা সম্ভব নয়।
প্রদেশটিতে ‘ইসলামপন্থী পদক্ষেপের’ জন্য খাইবার পাখতুনখাওয়ার (কেপি) সরকারের প্রশংসা করেন মৌলানা সামি। তিনি বলেন, শত্রুরা দেশটি ঘিরে রয়েছে, ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করা প্রয়োজন।
‘তালেবানের জনক’ মৌলানা সামি আরও বলেন, এই দুই দলের (পিটিআই ও জেইউআই-এস) আদর্শগত মিল রয়েছে এবং তারা একসাথে কাজ করতে পারে।
মৌলানা সামি ও ইমরান খানের এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জানিয়েছেন, দেশটির প্রধান ধর্মীয় দলগুলো যখন রাজনৈতিক জোট মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা শুরু করেছে, তখনই বৈঠকটি হলো।
২০০২ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগেও গঠিত হয়েছিলো নয়-দলীয় জোট এমএমএ। যা ধর্মীয় দলগুলোকে নিয়ে গড়ে উঠেছিলো। এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলো জেইউআই-এস।