নিজের দেশ, মা, মাটিকে ভালোবেসে আমেরিকার আয়েশি জীবন ফেলে চলে এসেছিলেন নিজ জন্মভূমিতে। জীবনের সকল ধরনের স্বার্থপরতা ত্যাগ করে সিনেমা নির্মাণে ব্রত হয়েছিলেন। বলতে চেয়েছিলেন নিজের মাটি ও মানুষের গল্প।
বলছি দেশের প্রয়াত কিংবদন্তী নির্মাতা তারেক মাসুদের কথা। গুণী এই মানুষকে হারানোর দশ বছর পূর্ণ হলো শুক্রবার (১৩ আগস্ট)।
মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মৃত্যু হয় তার। একই দিনে দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে ছিলেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী অন্যতম সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর। তাদের দুজন ছাড়াও আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়।
মৃত্যুদিনে তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ।
আগামী দিনের তরুণ নির্মাতাদের কাছে তারেক মাসুদ ছিলেন এক স্বপ্নের নাম। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠন তার মৃত্যু দিনে আয়োজন করেছে স্মরণ সভার। বিশেষ করে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি এবং তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট যৌথভাবে ‘তারেক মাসুদ স্মারক বক্তৃতা ২০২১’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
‘জাতিসত্তা, চলচ্চিত্র ও তৃতীয় দুনিয়া’ বিষয়ে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেবেন চলচ্চিত্র শিক্ষক, লেখক ও চলচ্চিত্র তাত্ত্বিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশ নেবেন তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান চলচ্চিত্রকার ক্যাথরিন মাসুদ এবং ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন।
করোনা অতিমারির সতর্কতার কারণে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে অন্তর্জালে। শুক্রবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে এটি৷
তারেক মাসুদ ভালোবাসতেন চলচ্চিত্রকে। তাকে সিনেমাযোদ্ধা বললেও ভুল হবে না। খুব সাধারণ জীবনযাপন করা মেধাবী এই মানুষটি যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন লড়াই করে গেছেন সিনেমা নিয়ে।
প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’র জন্য ২০০২ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে ডিরেক্টর ফোর্টনাইটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন তারেক মাসুদ। তার অন্য ছবিগুলোও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
তারেক মাসুদ নির্মিত অন্য পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো— অন্তর্যাত্রা ও রানওয়ে। এছাড়া আ কাইন্ড অফ চাইল্ডহুড, নারীর কথা, মুক্তির কথা, আদমসুরত, মুক্তির গানসহ আলোচিত কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন তিনি।