তিনি কোন অভিনেতা নন, বা বিখ্যাত কোন মডেল। কিংবা তিনি রাজনীতিবিদও নন। নিতান্তই একজন সাধারণ মানুষ। বরগুনা জেলার সর্বোচ্চ সরকারী কর্মকর্তা গাজী তারিক সালমন অয়ন।
শুধু একটি ঘটনা রাতারাতি বদলে দিয়েছে তার জীবন। বলা চলে দু’দিন আগেও যে মানুষটিকে কেউ চিনতই না; তিনিই এখন সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলের মুখেই এখন এক নাম। এত প্রশংসা-আলোচনা-ক্ষোভের মূলে সেই তারিক সালমন।
ছোট্ট এক শিশুর আঁকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ছবি স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে ব্যবহার করে আলোচনার কেন্দ্রে আসেন তিনি। তার হাতকড়া পরানো ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। সবাই এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এ ঘটনার পরপরই মুহুর্তেই তার ফেসবুকে একের পর এক আসতে শুরু করে বন্ধুত্বের অনুরোধ। সহজ জীবনে অভ্যস্ত এ কর্মকর্তার অনুসারীর সংখ্যা রাতারাতি বেড়ে দাঁড়ায় বারো হাজারে। পূর্বে তার বন্ধু তালিকা ৯৪৩ জনে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পনের’শ জনে। ৪ শতাধিক ক্ষুদে বার্তা জমা পড়েছে তার ইনবক্সে। সেখানে সকলেই প্রকাশ করেছে সহমর্মিতা ও সহানুভূতি।
সবার ভালবাসা ও আন্তরিকতায় অভিভূত এ কর্মকর্তা। চ্যানেল আই অনলাইনের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সবার কাছে। অচেনা হয়েও দুর-দুরান্ত থেকে যারা তাকে জানিয়েছেন ভালবাসা। যুগিয়েছেন সাহস।
‘আমি আসলে বাকরুদ্ধ। আমি আশা করিনি এত প্রতিক্রিয়া হবে। মানে এটা আমার অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। আমি দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের পজেটিভ প্রতিক্রিয়ার কারণে আমি আনন্দিত।’
তার সাভির্সের কর্মকর্তাদের সমর্থনে তিনি অনুপ্রাণিত কৃতজ্ঞ। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস জানিয়েছে তীব্র নিন্দা।
গাজী তারেক সালমন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকাকালে ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানের একটি আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ করেন। ওই আমন্ত্রণপত্রের পেছনের পাতায় পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া একজন শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপানো হয়।
ওই ছবিতে বঙ্গবন্ধুকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে মানহানী করা হয়েছে এমন অভিযোগে গত ৭ জুন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সালমনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদুল্লাহ সাজু।
গত বুধবার ওই মামলায় জামিন চাইতে গেলে বরিশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট্র আদালতের বিচারক মো. আলী হোসাইন প্রথমে তাকে কারাগারে পাঠান। তবে কয়েক ঘণ্টা পর তাকে আবার জামিন দেন।
এরই মধ্যে মামলার বাদী সাজুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।