মাকে নিয়ে কোনো কিছু বলতে গেলে শুরুতেই মনে আসে ‘মা তো মা-ই’। কোনো কিছুর সাথে তার আসলে তুলনা হয় না। তিনি অতুলনীয়া। তাই প্রত্যেকেরই মাকে নিয়ে একটা গল্প থাকে। আজ জনপ্রিয় কয়েকজন তারকার মুখে শুনব তাদের মায়ের গল্প।
অভিনয়শিল্পী শশী। মাকে নিয়ে তিনি বললেন, ‘মা আমার কাছে বন্ধু। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ গানের শক্তিগুলো পেয়েছি আমার মায়ের কাছে থেকে। মাকে আম্মু ডাকি। তাকে দেখেছি কীভাবে পারিবারিক বন্ধনকে অটুট রাখতে হয়। আমার মা নিজেও একজন শিল্পী। তিনি থিয়েটার করেন এবং বাংলাদেশ বেতারেও চাকরি করেন। শত ব্যস্ততার মাঝে তিনি আমাদের সময় দিয়েছেন। আমাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন আম্মু। আমি আজকের শশী শুধুই আমার আম্মুর জন্য। আম্মু আমাকে কখনোই বকা দেননি না, আব্বুও না। অবশ্য বকা খাওয়ার মতো কাজ আমি কখনোই করি না। কিন্তু তারপরও যদি ভুল হয়ে যায়, আম্মু শুধু বলবেন, এটা কি ঠিক হলো! এভাবে করলে হতো না? এই এতটুকুই। আসলে আম্মুর চোখ দেখে আমি বুঝতে পারতাম, আম্মু কী চান। আর আম্মুও আমাকে বুঝতেন অনেক বেশি।
সজল বলেন, ‘আসলে মার অবদান নিয়ে বলতে গেলে বলতে হবে গোটাই তার অবদান। আমার একটা অভ্যাস আমি মাকে যতটা ভালোবাসি কিংবা অনুভব করি, ঠিক ততটা প্রকাশ করতে পারিনা। কিন্তু কীভাবে যেন মা পুরো ব্যাপারটা বুঝে ফেলে। আমাকে আর মুখে কিছুই বলতে হয় না। আমার মায়ের বিশেষত্ব নিয়ে যদি কিছু বলতে হয় তবে বলব, আমার মা সবচেয়ে সুন্দর মানুষ। তার মতো সুন্দর আর আমার কাউকেই লাগে না। আমার ছোটবেলায় একবার ডিপথেরিয়া হয়। অনেকদিন হাসপাতালে ছিলাম। মা যেন তখন ছিলেন আমার অতন্ত্র প্রহরী। রাতের জন্য তিনি চোখের ঘুম হারাম করেছিলেন। নাওয়া-খাওয়া কিছুই ছিল না তার। আমি তখনো মুখ দিয়ে কিছু বলার আগেই তিনি বুঝে ফেলতেন। আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি, তখন থেকে মার কাছে থাকা হয়নি। দেশের বাইরে বড় হয়েছি। কিন্তু মার অভাব মা তখনো বুঝতে দেননি।’
চঞ্চল চৌধুরী তার মাকে নিয়ে বলেন, ‘আসলে মা-বাবার ঋণ তো কখনও শোধ করা যায় না। কিন্তু আমরা সন্তান হিসেবে তো তাদের মুখে হাসি ফুটাতেই পারি। এটা আমাদের সবার কতর্ব্য। আমার মা নমিতা চৌধুরী মা দিবসে “গরবিনী মা” পুরস্কার নিতে যাচ্ছেন। আর তা আমারই জন্য। এটা আমার জন্য ভীষণ গবের্র। আমার কাজের ব্যপ্তি অনেক। আর পুরস্কারও নিয়েছি অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের হাত থেকে। কিন্তু আমার মা আজ আমার জন্য যে পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন, তার তুলনা আমার কোনো পুরস্কার প্রাপ্তির সাথে চলে না। এটা আমার কাছে সব পুরস্কারের ঊর্ধ্বে। এক কথায় এটা অতুলনীয়। আর আমার মা-বাবাও খুব সাধারণ মানুষ। তারা গ্রামে থাকেন। কিন্তু কয়েক দিন হলো তারা ঢাকা এসেছেন। মার এই পুরস্কারপ্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে, গত কয়েকদিন যাবত যে আনন্দ এবং চাঞ্চল্য আমি তাদের মাঝে দেখেছি, তা ভোলার নয়। আমি আমার মাকে সম্মানিত করতে পেরে, আসলে তার কাছে থেকে অনেক অনেক আশীর্বাদ অজর্ন করেছি বলে মনে করি।