চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

তারকা জুটির প্রেম-বিয়ের জানা অজানা যতো কথা

দুই হৃদয়ের চাওয়া-পাওয়া একই সুতোয় গাঁথতে পারলেই নিখাঁদ ভালোবাসার জন্ম হয়। সেই ভালোবাসার মধুর কাব্যও অাছে আমাদের তারকাদের। অনেকে ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়েছেন জীবনের অমর সঙ্গী হিসেবে। সুখে-দুঃখে চালিয়ে নিচ্ছেন ঘর সংসার।

চ্যানেল আই অনলাইন বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে জানালেন সেসব তারকাদের সাহসী প্রেমের গল্প।


ওমর সানি-মৌসুমী: (প্রথমে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম)
ঢাকার চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় তারকা জুটি ও সুখী দম্পতি চিত্রনায়ক ওমর সানি ও চিত্র নায়িকা মৌসুমী। নব্বই দশকে চলচ্চিত্রে নাম লেখান খুলনার মেয়ে মৌসুমী। প্রয়াত সালমান শাহ্’র সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি। পরে ওমর সানির সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিনি। জুটির বাধার পর তখনি বাধা পড়েন প্রেমের জালে। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দু’জনের প্রথমে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। আর সেটা যে কখন ভালোবাসায় পরিণত হয় তা তারা কেউ জানেন না।

আর যখন জানলেন ঠিক ১৯৯৬ সালে বিয়ের পর্বটা সেড়ে ফেলেন তখনকার সময়ে হিট তারকা জুটি। মৌসুমী জনপ্রিয়তা যখন আকাশচুম্বী ও ক্যারিয়ারের সবচেয়ে টার্নিং শুধুমাত্র ভালোবাসার খাতিরে সে সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে সংসারমুখী এ নায়িকা। দীর্ঘ ভালোবাসার ঘরে একমাত্র ছেলে ও মেয়ে রয়েছে।

বিপাশা হায়াত-তৌকির আহমেদ: (লেকের পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে কথা হয়)
বিপাশা হায়াত তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল অনুষদে পড়েন। আঁকাআঁকি এবং ক্যানভাস নিয়েই তার যতো ব্যস্ততা। আর তৌকির আহদেম তখন বুয়েটে পড়াশুনা করতেন। ঢাকার মঞ্চে চুটিয়ে অভিনয় করছিলেন তৌকির। মঞ্চে তৌকিরের তখন ব্যপক জনপ্রিয়তা। একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক বন্ধুর আমন্ত্রণে তৌকির আসেন। আর সেখানেই বিপাশা হায়াতের ছবি আঁকা দেখে থমকে যান তিনি। আর সেদিন থেকেই বিখ্যাত বাবার মিষ্টি মেয়ে বিপাশার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর কয়েকবার দেখা হলেও পাকাপোক্ত ভাবে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় ‘রুপনগর’ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে।

সেই ভালোলাগা থেকে শুরু হয় ভালোবাসা। একদিন লেকের ধার দিয়ে হাঁটার সময় তৌকির তার ভালোবাসার কথাটা জানালেন বিপাশাকে। যদিও বিপাশা মনে মনে তৌকিরকে খুব পছন্দ করতেন। ব্যাস ভালোবাসার ভেলায় দুজনে ভাসতে থাকলেন।

আর ১৯৯৯ সালের ২০ জুলাই ভালোবাসার ভেলাটি কূলে আনেন তারা। এরপর দু’ পরিবারের মধ্যস্থতায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর সমান তালে অভিনয় করেছেন সফল এ তারকা জুটি। দুই সন্তান নিয়ে সুখের সংসার বিপাশা-তৌকির দম্পতির।

জাহিদ হাসান- সাদিয়া ইসলাম মৌ: (দু’জন দু’জনের কাজ পছন্দ করতেন)
দু’জন দু’জনের কাজ পছন্দ করতেন। টিভি পর্দায় দু’জনই দু’জনের কাজ দেখে দূর থেকে একপ্রকার ভালোলাগা তৈরি হয়। তবে কখনোই একসঙ্গে কাজ করা হয়নি দু’জনের। অবশেষে একবার বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে দু’জনে একসঙ্গে পারফর্ম করার সৌভাগ্য হয়। অনুষ্ঠানটি প্রচার হবার ব্যাপক আলোচিত হন জাহিদ হাসান ও মৌ জুটি। এরপর নানা অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখা সাক্ষাত প্রায় হতো।

আড্ডা যেনো বাড়তে থাকে সে সময়ে। একসঙ্গে উঠা-বসা করতে করতে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। এক সময় সেই ভালোবাসা থেকে গড়ে উঠে সুখের সংসারে। আজ সেই সুখের সংসারে দু্ সন্তানের বসবাস। মেয়ে পুষ্পিতা ছেলে পূর্ণর কোমল মুখচ্ছবি তাদের জীবেনে এখন পরিপূর্ণতা।

রাজীব আহমেদ-সুখ: (এক মুহূর্তে ভালোবাসা)
২৭ দিনের মাথায় প্রেম করে বিয়ে করেন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় সুরকার ও গীতিকার রাজীব আহমেদ। সময়টা ছিলো ২০১১। জীবনের একটি অদ্ভূত সময়ের মধ্যে একটি সুখপাখির সন্ধান পান তিনি। বাবা-মেয়ের সংসারে সুখ যেনো এনে দিয়েছিলো অনাবিল আনন্দ। বড় বোনের মাধ্যমে পরিচয়টি হলেও এক মুহূর্তেই মনের আদান-প্রদান শেষ করেন তারা দু’জন। এরপর ধীরে ধীরে মোবাইল ফেসবুকে কথা বলতে বলতে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন সুখ নামের সংসারে তারা আবদ্ধ হবেন। বিয়ে করবেন। এবং বিয়েও করেন প্রেমের ঠিক ২৭ দিনের মাথায়।

জনপ্রিয় এ সুরকার তার সংসার জীবন শুরু করেছিলেন দুইটি বালিশ, একটি তোশক, পানি খাওয়ার মগ নিয়ে। তবে বিশ্বাস ও বন্ধনের ভালোবাসায় মেয়ে জল ও ছেলেকে নিয়েই বর্তমান এ দম্পতির সুখের জীবন।

হিল্লোল-নওশিন: (জুটি বেঁধে অভিনয় এবং…..)
নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে দুজনের পরিচয়। একসঙ্গে জুটি বেঁধে অনেকগুলো নাটকে অভিনয়ও করেছেন। সেসব নাটকগুলোও পেয়েছিলো দর্শকজনপ্রিয়তা। নাট করতে গিয়ে শুটিং’এ দু’জনের মধ্যে ভালোবাসার আদান-প্রদান শুরু হয়ে যায়। তবে হিল্লোল অভিনেত্রী তিন্নির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর নওশীনের সঙ্গে উঠাবসা করায় একপ্রকান মনের মানুষ খুঁজছিলেন মনের মতো করে।

বিয়ে করেবেন তারা, এটা দিনের মতই ছিলো ঝকঝকে। পথচলা যখন শুরু হয়েছে তখন কবুল বলেই সেই পথ চলাকে আরো বেশি শুক্তিমালী করতে হবে। একসঙ্গে বাঁধা পড়লেন দু’জন। তবে বিয়ের পর্বটি অনেকটা গোপনেই সেড়েছেন নওশীন-হিল্লোল দম্পতি।

রিয়াজ-তিনা: (একটি গানের দৃশ্য এবং প্রথমে দেখা…..)
চিত্রনায়ক রিয়াজ ও মডেল তিনার পরিচয় সূত্র হিসেবে কাজ করেছে ‘হৃদয়ের কথা’ সিনেমাটি। হৃদয়েল কথা সিনেমায় একটি গানের নাচের দৃশ্যে প্রথম পরিচয় হয় তাদের। সে সময় রিয়াজ প্রধান নায়ক হলেও তিনা ছিলেন সাধারণ একজন সহকর্মী। সেই গানের দৃশ্যের শুটিং’র পর রিয়াজের মনে তিনা নামের মেয়েটি বাসা বাঁধে। তবে তিনার মনের বাসা বাঁধতে রিয়াজ দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। এভাবে যখন চলছিলো হঠাৎ একদিন রিয়াজকে প্রেমের প্রস্তাব দেন লিয়াঝ। সেসময় তিনা শুটি’র জন্য বিদেশে যাচ্ছিছিলেন। এয়ারপোর্ট থাকাকালীন রিয়াজ তাকে ফোনে প্রস্তাবটি করেন।

তিনা অবশ্য কোনো উত্তর দেননি সেসময়। প্রেমিকার উত্তর পাওয়ার জন্য ২০ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিলো ‘রোমান্টিক হিরো’ খ্যাত রিয়াজকে। যেদিন তিনা বিদেশ থেকে ফিরে আসলেন ঠিক সেদিন বিকেল বেলায় অবশেষে ভালোবাসায় প্রস্তাবে রাজি হন তিনা। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুই পরিবারের সম্মতিতে শুভ পরিণয় হয় তাদের। ভালোবাসার বন্ধনে তাদের ঘরে রয়েছে ফুটফুটে একমাত্র ছেলে সন্তান।

মুরাদ পারভেজ-সাবা: (নাটকের শিডিউল নিতে গিয়ে প্রেম)
নির্মাতা মুরাদ পারভেজ নিজের নাটকে অভিনয় করানোর জন্য ধরনা দিলেন অভিনেত্রী সাবার দরবারে। সাবা মোটেও পাত্তা দিলেন না। পর পর তিনবার এমন হলো। মুরাদ রীতিমতো আঘাত পেয়েছে মনে। তবুও পিছু ছাড়লেন না সাবার। শেষমেশ রাজি হলেন সাবা। নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে মুরাদের উপর রীতিমতো মুগ্ধ হয় সাবা।

এরপর রাত জেগে ফোনালাপ। দীর্ঘ প্রেম পর্বের পর বিয়েও করে ফেললেন একেবারে লুকিয়ে। তবে তাদের বিয়ে কথাটা ফাঁস করলেন একবছর পর। বর্তমানে তাদের ঘরে সুখের পায়রা একমাত্র ছেলে রয়েছে। সুখের দোলনায় সংসার করার পাশাপাশি একসঙ্গে সমান তালে কাজও করে যাচ্ছেন।