ব্যাঙ্গালুরু (কর্ণাটক) থেকে: বেশ কিছু এলাকার মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায়ও কাউকে মনে পড়া বোঝাতে বলা হয় ‘পেট পুড়ছে’। চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবালের জন্য এখন আসলেই ‘পেট পুড়ছে’ বাংলাদেশের। টাইগার ক্রিকেটারদের মধ্যে একটু বেশি স্বাস্থ্যের এ তরুণ আজ পেটের পীড়া থেকে পুরোপুরি সুস্থ হলে তাকে শুধু ব্যাট হাতে নিলেই হবে না, ব্যাটের ঝলকও দেখাতে হবে।
ভারতের `গার্ডেন সিটি’ হিসেবে পরিচিত এই ব্যাঙ্গালুরুর হোটেল রিজ কার্লটনে বিশ্রামে থেকে তামিমও বুঝতে পারছেন গত ম্যাচে না থাকায় আজ তার কাছে প্রত্যাশা আর পাওনা দুটোই বেশি দেশবাসীর।
তাছাড়া ওয়ানডেতে নিজেকে প্রমাণ করলেও টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে ভারতের বিপক্ষে এখনো জ্বলে উঠেনি তামিমের ব্যাট। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে যে চারটি টি-টুয়েন্টি খেলেছে তার মধ্যে তামিম দলে ছিলেন তিনটি ম্যাচে। ওই তিন ম্যাচে তার স্কোর ১৫, ৬ এবং ১৩।
ঢাকায় এবারের এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে দলে না থাকলেও বাংলাদেশ-ভারতের বৃষ্টি বিঘ্নিত ফাইনালে ঠিকই ছিলেন ড্যাশিং ওপেনার। কিন্তু ১৭ বলে ১৩ রান করার পর ভারতের আলোচিত বোলার বুমরার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয় তাকে।
নয় বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ দলে ওপেনিংয়ে সঙ্গী হিসেবে তামিম পেয়েছেন অনেককেই। সৌম্য সরকারের আগে সময়ে সময়ে তার সঙ্গী হয়েছেন শাহরিয়ার নাফিস, মোহাম্মদ
আশরাফুল, নাজিমুদ্দিন, জুনায়েদ সিদ্দিকী, ইমরুল কায়েস এবং এনামুল হক বিজয়। অন্যপাশে একের পর এক রদবদল চললেও এক প্রান্ত আগলে রেখে তামিম ইকবাল খেলে যাচ্ছেন নিজের মতো করে।
তামিমের সবশেষ ও বর্তমান পার্টনার সৌম্য সরকার, কেউ কেউ যাকে বলেন ক্ল্যাসিক ওপেনার। কিন্তু ইদানিং তার ব্যাটে সেই ক্লাস অনেকটাই অনুপস্থিত। আর সে সুযোগে তার দিকেই আঙ্গুল তুলছেন অনেকে।
এ বিশ্বকাপে আসলেই নিজের নামের প্রতি খুবই অবিচার করে চলেছেন ‘ফিয়ারলেস’ সৌম্য। আজ কি কিছুটা দুঃখ ভোলাবেন তিনি? বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন, এখনই বিশ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত সৌম্যকে। প্রতিপক্ষের নাম ভারত হওয়ার কারণেই হয়তো আরো বেশি দেওয়া হচ্ছে ‘এক্সিং থিওরি’।
ভারতের বিপক্ষে তার খেলা দুটি টি-২০ ম্যাচই এবারের ঢাকার এশিয়া কাপে। দুটিতেই সৌম্য আউট হয়েছেন বাজে শট খেলে। প্রথমটিতে ১১ রান করে কট বিহাইন্ড। বোলার সেই বোমরা। তার এক্সট্রা বাউন্সে পরাস্ত হয়ে ধোনির হাতে ধরা পড়েন সৌম্য।
ফাইনাল ম্যাচে তার দিকেই তাকিয়ে ছিলো টিম টাইগার্স। সে ম্যাচেও হতাশ করেন তিনি। ভারতের অভিজ্ঞ পেসার আশিষ নেহরার বল আগেই খেলে বসেন, মিস টাইমিং হয়ে বল চলে যায় মিডউইকেটে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে।
সংক্ষেপে বাংলাদেশী দুই ওপেনারের এ হচ্ছে ভারত অভিজ্ঞতা।
তবু আজকের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে এ দুজনই বাংলাদেশের ইনিংস ওপেন করুক এমনটাই চান হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও। তার হাতে এ মুহূর্তে এর ভালো বিকল্পওতো নেই। এশিয়া কাপ এবং চলতি টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যে আস্থা অর্জন করতে পারেননি মিঠুন আলি।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আত্মবিশ্বাসহীন কাউকে পাঠিয়ে শুধু শুধু চাপ নেওয়ার ঝুঁকি হয়তো নিতে চাইবে না টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ, এখন একটি জয়ের জন্যও যে খুব ‘পেট পুড়ছে’ বাংলাদেশের।