আগে একটু সমালোচনায় মাথা গরম হয়ে যেত। নেতিবাচক কথা শুনলেই ‘পুল’ করতে চাইতেন। সেই তামিম এখন পরিণত। সমালোচকের কথায় উত্তেজিত হন না। ঠাণ্ডা মাথায় ‘লেটকাট’ করেন। কখনও ‘ডিফেন্স’ করেন। শেষ কয়েক বছরে এমনি করে মানসিকভাবে নিজেকে পরিবর্তন করেছেন। সচেতন হয়েছেন শারীরিকভাবেও। জিম আর অনুশীলনে নিজেকে উজাড় করে দেন।
‘গত দুই বছরে ফিটনেস নিয়ে আমি সচেতন হয়েছি। এই সময়ে প্রায় দশ কেজি ওজন কমিয়েছি। যা খুব কাজে দিয়েছে,’ আইসিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের সাফল্যের রহস্য বলছিলেন তামিম।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে তামিমের ব্যাট হাসছে নিয়মিত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। একটা সময় ছিল, যখন অর্ধশতকের পর আর সামনে যেতে পারতেন না।
‘মানসিকতায়ও পরিবর্তন এনেছি। সব সময় বড় ইনিংস খেলতে চাই। উইকেট ছুঁড়ে আসতে চাই না। তবু এখনো মাঝে মাঝে এমনটা হচ্ছে।’
২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তামিম ৬০’র বেশি ১০০’র কম রান করে আউট হয়েছেন আটবার। এর মধ্যে ৯৫ রানে ফেরার নজির আছে একবার। চেষ্টা করছেন এই ‘অভ্যাস’ থেকে নিজেকে বের করে আনার, ‘সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো আমি ৭০ কিংবা ৮০ রানকে সেঞ্চুরিতে নিতে পারতাম না। ওগুলোর মধ্যে পাঁচটাও যদি সেঞ্চুরি করতে পারতাম, তাহলে এখন ১৫-১৬টা সেঞ্চুরি থাকতো। এখন বয়স মাত্র ২৮। আরও ছয়-সাত বছর পড়ে আছে। এখন যেভাবে খেলছি, সেটা চালিয়ে যেতে পারলে ভালো লাগার মতো একটা অবস্থানে থাকতে পারবো।’
তামিম এখন শিখতে কতটা আগ্রহী সেটা তার কথা শুনলেই বোঝা যায়, ‘সবসময় দেশের কিংবা বাইরের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। কারণ আমি মনে করি শেখার শেষ নেই।’
‘শচীনের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি যা বলেন, তার যদি একটা-দুইটা বিষয়ও নেয়া যায়, তাহলে আপনি আগের চেয়ে ভালো ক্রিকেটার হবেন। সুযোগ পেলে বিরাট কোহলির সঙ্গেও কথা বলতে চাই। কারণ সে বড় ইনিংস খেলার মাস্টার।’
এই তামিম কিছুটা দার্শনিকও, ‘আমি নিখুঁত নই। বাজে সময়ের ভেতর আমাকে অনেক সাঁতরাতে হয়। আমি কেবল মাত্র আমার খেলার ওপর কাজ করে যেতে চাই। সেই সব লোকের সঙ্গে কথা বলতে চাই, যারা এমন সময়ের ভেতর দিয়ে গেছেন।’