এবারের ঈদযাত্রায় মাত্র ১২ দিনে সারাদেশে ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৪ জন নিহত এবং ৮৬৬ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এর সঙ্গে রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনাগুলো যোগ করলে নিহতের সংখ্যা হয় ২৫৩ জন।
রোববার দুপুরে ঈদের আগে ও পরের মোট ১২ দিনের দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে সংগঠনটি বলছে, এসব ঘটনার প্রধান কারণ যানবাহনের বেপরোয়া গতি। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা সামান্য কমেছে বলেও দাবি করা হয়।
আজকে যখন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়কের এমন ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরছিলেন, ঠিক তার কিছুক্ষণ আগেই কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনার কথা আমরা জানতে পেরেছি।
এর মানে শুধু ঈদযাত্রায় না, স্বাভাবিকভাবেও এদেশের সড়কে প্রতিদিনই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ যেন ‘সয়ে যাওয়া’ কোনো ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিশ্চিত করেই বলা যায়, পৃথিবীর খুব কম দেশেই মাত্র ১২ দিনে আড়াই শতাধিক নিহতের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে যখন এ নিয়ে এতো এতো আলোচনা হয়, কথা হয়। কিন্তু তারপরও কোনো পরিবর্তন নেই। মৃত্যুর মিছিল বাড়তেই থাকে সড়কে। তার সাথে আবার যোগ হয়েছে নৌ এবং রেলও।
এবারের ঈদে যতগুলো দুর্ঘটনা ঘটেছে তার বেশির ভাগই ( ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ ) বাস আর মোটর সাইকেলের (২৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ) কারণে হয়েছে বলে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আমরাও লক্ষ্য করেছি, ইদানিং মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে কিশোর কিংবা অল্প বয়সী তরুণেরা এর বলি হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। আর বাসের তো কথাই নেই। বেশির ভাগ বাস চালক কোনো কিছুই পরোয়া করে না।
এমন ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তির উপায় কি? না কি এভাবেই চলতে থাকবে বছরের পর বছর। গত ঈদেও আমরা দেখেছি একই পরিস্থিতি। তার আগের ঈদগুলোতেও সড়কে নিহতদের সংখ্যা বলতে গেলে প্রায় একই রকম ছিল।
আমরা মনে করি, কঠোরভাবে আইন মানতে বাধ্য করা না হলে, এ থেকে জাতির মুক্তি মিলবে না। তাই এখন আর আইনের কথা বলে কোনো লাভ নেই। আইন মানাতে হবে। তাতে যদি কিছুটা হলেও সড়কের শৃঙ্খলা ফিরে আসে। আর দেরি না করে দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।