চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

তবুও আশা নিয়েই বেঁচে থাকা

শেষ পর্যন্ত সারাদেশে একযোগে গণ হারে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলো আজ থেকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার ভার্চুয়ালি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর নিজেও ভ্যাকসিন নেন। এদিন ঢাকাসহ দেশের ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়ার কাজ চলেছে। এসব কেন্দ্রে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ আমলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ ভ্যাকসিন নিতে দেখা গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে আমরা এরই মধ্যে জেনেছি, ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আজকে সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলেই মনে করছেন এই কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা। সরকারের সিদ্ধান্ত; দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ বা ১৩ কোটি সাড়ে ৮২ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেবে।

গণ হারে ভ্যাকসিন প্রয়োগের দিনটি বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই এক ঐতিহাসিক দিন। তবে আরেকটা কারণে দিনটি দেশের মানুষের কাছে ‘বিশেষ’ হয়ে থাকবে- করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর গত প্রায় ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছে। শতাংশের হিসাবে তা মাত্র ২ দশমিক ৩৫%।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় অ্যান্টিজেন টেস্টসহ ১২ হাজার ৪০৪টি নমুনা পরীক্ষায় মাত্র ২৯২ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। যদিও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। এই সময়ে নতুন করে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আমরা দেখেছি, গত বেশ কয়েকটি ধরেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে তথ্য-উপাত্ত গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছে; তাতে শনাক্তের হার ক্রমশ কমছে। এতে অনেকেই আশাবাদী অল্পদিনের মধ্যেই দেশ থেকে করোনাভাইরাস নির্মূল হবে।

তবে দেশ থেকে হঠাৎ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ায় কেউ কেউ সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা টেস্টে অনীহার কথা বলছেন। তাদের যুক্তি এরই মধ্যে বহু মানুষ নিজেদের অজান্তেই আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থও হয়ে গেছে। তাই করোনা টেস্টের সংখ্যাও কমেছে। অন্যদিকে আবার বহু মানুষ এখন করোনাভাইরাসকে পাত্তাই দিচ্ছে না।

করোনাভাইরাস নিয়ে সেই শুরু থেকে নানান রকম গুজব-অপপ্রচার ছিলই। তা এখনো আছে। হয়তো শেষ পর্যন্তও তা থাকবে। তবে আমাদের দায়িত্বশীল হতে হবে ভ্যাকসিন নিয়ে যে গুজব, তা রোধ করতে। কেননা এতে সরকারের এই মহাযজ্ঞ অনেকটাই বাধাগ্রস্থ হতে পারে।

আমরা মনে করি, আজ এই ভ্যাকসিন কর্মসূচি আমাদের মধ্যে যে আশার বীজ বপণ করেছে, তা নিয়েই বাঁচতে হবে। সবার আশা এই মহামারীর পরিসমাপ্তি ঘটবে ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই। করোনাভাইরাসে তৈরি এ অন্ধকার একদিন শেষ হবে, অন্য সবার মতো আমাদেরও তাই প্রত্যাশা।