৮ নভেম্বর এমন এক সময়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হচ্ছে, যখন এই সময়ে তফসিল ঘোষণা না করতে অনুরোধ করেছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকফ্রন্ট। উভয়পক্ষ অনড় অবস্থানে থাকায় এ নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে ইতোমধ্যে সরাসরি বাক-বিতণ্ডাও হয়ে গেছে। কর্মসূচি দিয়ে রেখেছে ঐক্যফ্রন্ট।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন জোটের পক্ষ থেকে বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন: ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এখতিয়ার। কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর সরকারের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।’
এইচ টি ইমাম বলেন: ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কমিশনের সাথে বৈঠক করে রুচিহীন ও অমার্জিত আচরণ করেছেন। সাধারণ জনগণ ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দেবে।’
তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে বিগত জাতীয় নির্বাচন বিশ্লেষণ করলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের আশঙ্কার জায়গা তৈরি হয়। বেশি পেছনে না গিয়ে যদি ওয়ান ইলেভেনের আগের কর্মকাণ্ডগুলো দেখা হয়, তখনও দেখা যাবে সংকটের শুরু হয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখেই। সেই সময়কার নির্বাচন কমিশনের একগুঁয়েমি, তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের অশুভ পরিকল্পনাসহ নানাবিধ কারণে তখনকার বিরোধী পক্ষ আওয়ামী লীগ আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে এবারের নজিরবিহীন সংলাপ সেই আশঙ্কাকে বিলীন করে দিয়েছে। রাজনৈতিক জোটগুলোর এই সংলাপ আমাদের আশাবাদীও করে তুলেছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বোঝাপড়ায় ব্যর্থতার কারণে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু থাকছে না।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইতোমধ্যে যে বাকযুদ্ধ হয়ে গেল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামের রাজনৈতিক জোটের, তা কখনোই আমাদের কাম্য নয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংযত হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেরও আরও কৌশলী হওয়া প্রয়োজন ছিল।
এতকিছুর পরও বুধবার ইসি আবারও জানিয়েছে, ৮ নভেম্বর সিইসি জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। আমরা চাই, তফসিল ঘোষণাকে সামনে রেখে নতুন করে যাতে কোনো ধরনের সংকট তৈরি না হয়। এজন্য নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এখনও মনে করি, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে এ বিষয়ে আরও আলোচনা করে তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব।