ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে সত্যতা যাচাই না করে সাংবাদিক গ্রেপ্তার করা যাবে না।
বুধবার ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায়-২০২১ এসব কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, মামলা হওয়ার আগে এখন তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেলে যাচ্ছে। যদি অভিযোগ মামলা করার মতো হয় তাহলে মামলা কোর্টে যাবে। এখন কিন্তু কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। আগে যাচাই-বাছাই হয়। এ আইন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি।
ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৬৪ সাল থেকে আমি খবরের কাগজ পড়ি। তখন আমার বয়স আট। ক্রাইম রিপোর্টিং আলাদাভাবে ছিল না। আগে আইনজীবীদের মধ্যেও এমনটি ছিল। কিন্তু এখন আলাদা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছে সাংবাদিক ও আইনজীবীরা।
মন্ত্রী আরও বলেন, অপরাধের তথ্য অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানার আগেই দিচ্ছে সাংবাদিকরা। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সবার। সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যে সুসম্পর্ক তা খুবই গভীর হয়েছে। আমাদের দেশে যতো টক শো হয়, এতো টক শো অন্য দেশের গণমাধ্যমে হয় না। বাক-স্বাধীনতা নাই তা বলা যাবে না। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাও হচ্ছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এও জানি, এর অপব্যবহার হয়েছে। এটা যাতে বন্ধ হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।
‘গত বছরই জাতিসংঘে ডায়ালগ শুরু করেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধে করণীয় কী হতে পারে, সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বেস্ট প্র্যাকটিস যাতে হয়, আইনের ক্ষমতাবলে বিধিতে সেসব রাখা যাবে যাতে আইনের অপব্যবহার না হয়। জাতির পিতা পেশাজীবীদের স্বাধীনতার জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তারই কন্যা শেখ হাসিনাও সাংবাদিকদের বাক-স্বাধীনতা খর্ব করতে পারেন না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কে এম আজাদ ও ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু।