শিশুটির বয়স ১৩ বছর। খুঁটির সাথে বাঁধা অবস্থায় তাকে ক্রমাগত পেটাচ্ছে তিন যুবক। হাত-পাসহ শিশুটির সমস্ত শরীরে বারবার লাঠি দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। শিশুটির চারপাশে দাঁড়িয়ে কিছু মানুষ দেখছে সেই দৃশ্য। কিন্তু এমন নির্যাতন থেকে শিশুটিকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসছে না। নির্যাতনের এক পর্যায়ে শিশুটি আর্তনাদ করে পানি চেয়েছিলো। না, তার আর্তনাদ পৌঁছেনি কারো কাছে। এক ফোটা পানি হাতে এগিয়ে আসেনি কেউ। নৃশংস্য মৃত্যু হয় তার।
বর্ণিত দৃশ্যটি কোনো নাটক সিনেমার নয়। পুরোপুরি বাস্তব। ২০১৫ সালের ৮ জুলাই চুরির অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শেখপাড়ায় এভাবেই নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে।
এই নৃশংস্য ঘটনা নাড়া দিয়েছিলো পুরো বাংলাদেশের প্রতিটি মানবিক মনকে। রাজন হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলো গোটা বাংলাদেশের মানুষ। আর এবার রাজন হত্যার সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নির্মিত হয়েছে তথ্যচিত্র ‘আর্তনাদ’।
সম্প্রতি সাধনা মহল নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পায় তথ্যচিত্র ‘আর্তনাদ’। প্রায় সাড়ে বারো মিনিটের এই তথ্যচিত্রে ফুটে উঠে শিশু রাজন হত্যার বিস্তারিত কাহিনী। যেখানে রাজনের বাবা, মা থেকে শুরু করে সেই নির্মম ঘটনার স্বাক্ষিদের বেশ কয়েকজনের কথা তুলে ধরা হয়।
রাজনকে নির্যাতনের যে মুহূর্তটির ভিডিও ধারণ করেছিলেন স্থানীয় যুবক নুরু মিয়া, তার অনুতপ্তমাখা কথাগুলোও তথ্যচিত্র ‘আর্তনাদ’-এ তুলে ধরা হয়।
তথ্যচিত্র ‘আর্তনাদ’-এর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ছিলেন সাধনা মহল, রোকন রহমান, কাওসার মাহমুদ ও কাওনাইন সৌরভ। চিত্রগ্রহণে ছিলেন মনির হোসেন ও খোরশেদ আলম। নেপথ্য কণ্ঠে ছিলেন সাকিলা মতিন মৃদুলা, সম্পাদনায় এ বাসেত।
শিশু রাজনকে নিয়ে তথ্যচিত্র ‘আর্তনাদ: