ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ইসরাত জাহানের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, ময়নাতদন্ত ছাড়া এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে তারা।
আজ রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন লালবাগ ডিভিশনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা।
তিনি আরও বলেনম, ‘রাজধানীর আজিমপুর সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের একটি ভবনের বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া ইসরাত জাহানের মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যু সঠিক কারণ জানা যাবে।’
‘‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। এখন কোনো কিছু বলা যাবে না। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।’’
ঘটনার খবর শুনে ঢামেক হাসপাতালে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েটি একটি বাসায় সহপাঠীদের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন। মৃত ছাত্রীর সহপাঠীরা হাসপাতালে এসেছেন। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে বলা হয়েছে সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে।
যা বলছেন সহপাঠীরা
ইসরাতকে বাসা থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাফায়েত আহমেদ।
সাফায়েত গণমাধ্যকে বলেন, শনিবার বিকালে দোকানে যাওয়ার সময় তৃপ্তি বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল। আগে থেকেই তার অ্যাজমা (হাঁপানি) ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। বৃষ্টিতে ভিজে শরীর খারাপ লাগায় গতকাল সে আর বাসা থেকে বের হয়নি। পরে রাতে যখন রুমের সবাই ঘুমিয়ে পড়ে, সে তখন ওয়াশরুমে যায়। ঠিক কখন সে ওয়াশরুমে গিয়েছিল, তা কেউ বলতে পারছে না।
তিনি আরও জানান, রোববার ভোরের দিকে রুমমেটরা সাড়াশব্দ পায়, কিন্তু বাথরুমটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। আমি অন্য জায়গায় থাকি। ইশরাতের রুমমেট ও সহপাঠী রাহনুমা তাবাসসুম রাফি আমাকে ফোন দিলে আমিও সেখানে যাই। পরে ৯৯৯-এ ফোন দেওয়ার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে সাতটার দিকে অজ্ঞান অবস্থায় তৃপ্তিকে বাথরুম থেকে বের করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইশরাত জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সংযুক্ত ছিলেন। নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার নীলকণ্ঠপুর গ্রামের মো. আলতাফ উদ্দীনের মেয়ে তিনি। হল বন্ধ থাকার কারণে ইশরাত ও তার এক বান্ধবী আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন।