উত্তরবঙ্গের একটি জেলা থেকে ঢাকায় নাশকতা করতে এসে গ্রেপ্তার হয়েছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি’র তিন সদস্য।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাত সাড়ে আটটায় গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম বিভাগ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. আব্দুল্লাহ (২৪), সফিকুল ইসলাম ওরফে মোল্লাজী (৩৮) ও মোস্তফা হোসেন আরিফ (২৫)।
ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে কাউন্টার টেররিজম বিভাগ জানায়, তারা প্রত্যেকেই পুরাতন জেএমবি’র সদস্য ছিলেন। পরবর্তী সময়ে গুলশান হলি আর্টিজান মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি সোহেল মাহফুজের মাধ্যমে তারা নব্য জেএমবির দীক্ষা লাভ করেন। তাদের মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপস ও প্রটেকটিভ টেক্সট ব্যবহার করে বিভিন্ন মাধ্যমে নব্য জেএমবি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন।
গ্রেপ্তাররা ২০১৭ সালের শেষের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর হাসপাতালের পাশে মহানন্দা নদীর পাড়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন নব্য জেএমবির এক সভায় মহসিন ও বাদরুলের মাধ্যমে সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তারা ঐ সভায় উপস্থিত সংগঠনের আরো কয়েক জনের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেছেন।
কাউন্টার টেররিজমের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার সফিকুল ইসলাম ওরফে মোল্লাজী এবং মোস্তফা হোসেন আরিফ নব্য জেএমবি’র অন্যান্য সদস্য শাহিন আলম ওরফে আলামিন, জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন, আরিফ, কবির, জহিরুল ওরফে মামুনুর রশিদ ও হারুনসহ বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে নিয়ে যায়।
জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন ২০১২ সালে বান্দরবানে জেএমবির অন্তর্কোন্দলে নিহত সালমান ওরফে তারেক হত্যা মামলার আসামি এবং জহিরুল ওরফে মামুনুর রশিদ, ২০১৫ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে কলেজ শিক্ষিকা কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি। ভারতে গিয়ে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ঝাড়খন্ড, কেরালাসহ বিভিন্ন রাজ্যে ভারতীয় জঙ্গিদের সাথে যৌথভাবে বোমা তৈরি ও অস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
চলতি বছরের জুন মাসে তাদের সংগঠনের সদস্য মামুন, জিয়াউর রহমান ওরফে বাদল ওরফে মহসিন ও আল আমিন ওরফে শাহিন ভারতীয় পুলিশ দ্বারা গ্রেপ্তার হলে তারা সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সন্ত্রসীরা দেশে ফিরে এসে গ্রেপ্তার মো. আব্দুল্লাহর মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।