গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন: নাগরিকের মৌলিক অধিকার কেউ খর্ব করুক এটা শেখ হসিনা সরকার কোনোভাবেই চায় না।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘ইমারত নির্মাণে সরকারের দায়িত্ব ও নাগরিকদের করণীয়’ বিষয়ে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরকে বাস উপযোগী, ঝুঁকিমুক্ত আধুনিক একটি নগরীতে পরিণত করার জন্য যেখানে যা যা করা দরকার, আমরা সে পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’
‘‘আমরা ঢাকা মহানগরীকে একটা মৃত্যুকূপে পরিণত হতে দিতে পারি না। কিছু অর্থলিপ্সু মানুষের লোভের কারণে মানুষের জীবন চলে যাবে, তাদের পরিবার অসহায় হয়ে পড়বে, এতো বড় ক্ষতি আমরা হতে দিতে পারি না।’’
সরকার সবার জন্য প্লট, ফ্ল্যাটসহ বিভিন্নভাবে আবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত, পরিবেশসম্মত আবাসন আমরা এখনো গড়ে তুলতে পারিনি। আমাদের নতুন শহর ঝিলমিল, পূর্বাচল, উত্তরা ৩য় ফেজ-সেখানে ৪৫ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রেখেছি। যেনো দুটি বাড়ির মাঝে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা থাকে, সেখানে যেনো পরিবেশ দূষণ না হয়, খেলার মাঠ রেখেছি, পার্ক রেখেছি, লেক খনন করছি, বাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থা এবং চিত্ত-বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
‘‘পুরনো ঢাকার অপরিকল্পিত ভবন রাতারাতি ভেঙ্গে নতুন কিছু করা সম্ভব হয়নি। আমরা সেখানে রি-ডেভেলপমেন্টের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আমরা পুরনো বিল্ডিং ভেঙ্গে মানসম্মত, পরিবেশসম্মত, বিল্ডিং কোড মেনে নতুন বিল্ডিং করে দেবো। যাতে পুরনো ঢাকায় জীবন ঝুঁকিপূর্ণ না থাকে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশনা রয়েছে।’’
বনানীর এফ আর টাওয়ারের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তিন ধরনের মানুষ জড়িত উল্লেখ করে শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, ‘লোভী মালিক, লোভী ডেভেলপার এবং এই ডেভেলপমেন্ট কাজ দেখভাল করার যাদের দায়িত্ব ছিলো অর্থাৎ রাজউকের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা, পরিদর্শক, অথরাইজড অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সকলে।’
‘‘আরেকটি বিষয় ছিলো অপরাধের চিহ্ন পাওয়ার পরও ব্যবস্থা না নেয়া। ২০০৭ সালে এফ এর টাওয়ারের অবৈধ অংশের রিপোর্ট আসার পরও রাজউক এর চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। কেন সেটা তারা করেননি অথবা পরবর্তী সময়ে কেন এ বিষয়টি কারো দৃষ্টিগোচরে আসলো না, সেটা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
ইমারত নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত শুধু তারা নয়, এই নির্মাণ পরিদর্শন করার দায়িত্ব রাজউকের যাদের ছিল তাদেরকেও সমান দায় নিতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন: বাংলাদেশের ইতিহাসে এ জাতীয় ঘটনায় অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি, এফ আর টাওয়ারের ঘটনায় আমরা মামলা করেছি। একাধিক আসামি গ্রেফতারও হয়েছে। আইনের শাসনের আওতায় অবহেলাকারীদের আনার এটি বাংলাদেশে প্রথম দৃষ্টান্ত।
রাজউক বড় কর্মসূচি নিতে পারবে কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘র্যাংগস ভবনসহ প্রভাবশালীদের অনেক স্থাপনা ভাঙ্গা হয়েছে, সমস্যা হয়নি। শেখ হাসিনা সরকারের সিদ্ধান্ত, অপরাধ কে করেছেন সেটা দেখে বিচার হবে না, যেমনভাবে অনেক দুর্নীতিবাজের বিচার হয়েছে।’
ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ডুরা) এর সভাপতি মশিউর রহমান খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ডুরা) এর সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল।