ড. কামাল হোসেনকে কখনোই জাতির সংকটের সময় পাওয়া যায়নি, বরং তিনি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ফেরার পথে আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দেখান। যার রেশে গতকাল শুক্রবার তাকে নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে ড. কামালের এমন আচরণে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়। দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন: ‘প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনারা দেখেছেন গতকাল ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে কি ধরনের অশোভন এবং ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন। সাংবাদিক বন্ধুদের এমন হুমকি-ধামকির ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ড.কামালদের জাতি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে মন্তব্য করে নানক বলেন: ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে মূল্যহীন ‘মাকাল ফলে’ পরিণত হওয়া আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, কাজী জাফরউল্লাহরা আবারও মিলিত হয়েছেন। ঐক্যফ্রন্ট পরগাছাদের সম্মিলিত এক প্ল্যাটফর্ম। বাংলার স্বাধীনতাকামী জনগণ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে তাদেরকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে বলে বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে ড.কামালের ভূমিকা সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন: কামাল হোসেনকে কখনোই জাতির সংকটময় মুহূর্তে পাওয়া যায় না। ’৭১-এ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এবং ১৯৭৫ সালে ড. কামাল হোসেনের রহস্যজনক ভূমিকার কথা জাতির অজানা নয়। জাতির ক্রান্তিলগ্নে কখনো তাকে পাওয়া যায়নি। বরং বিভিন্ন সময় দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। ঐক্যফ্রন্ট গঠন এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতারই অংশ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ড. কামালের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকেরা তার কাছে জানতে চান, ‘জামায়াতের তো রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, এখন জামায়াত সম্পর্কে আপনাদের সর্বশেষ অবস্থান কী?’
প্রথমে এমন দিনে এসব প্রশ্ন করতে তিনি নিষেধ করলেও আবারও এ প্রশ্ন করা হলে এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হন কামাল হোসেন। তিনি এক সাংবাদিককে ভৎর্সনা করে উল্টো জিজ্ঞেস করেন ‘কত টাকা পেয়েছ? কাদের টাকায় এসব প্রশ্ন করছ, তোমার নাম কী? দেখে নেব, কোন টিভি/পত্রিকায় কাজ করো চিনে রাখবো, চুপ করো, খামোশ!’
ক্ষেপে গিয়ে ড. কামালের এমন আচরণ নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই চলছে সমালোচনার ঝড়। পরে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা।