কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা মারা গেছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার ৬০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে। সংস্থাটির সভাপতি ক্লদিও তাপিয়ে বলেছেন, আমাদের কিংবদন্তির মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ডিয়েগো আর্মান্ডো ম্যারাডোনা, সবসময় আমাদের হৃদয়ে থাকবেন।
ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ম্যারাডোনা নিজ দেশের ঘরোয়া লিগের দল জিমনেসিয়ার কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৬০ সালে জন্ম নেয়া মহানায়কের ৬০তম জন্মদিন ছিল গত ৩০ অক্টোবর।
গত কিছুদিন ধরেই শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না ম্যারাডোনার। সুস্থভাবে বাঁচতে ছাড়তে হবে মদের নেশা, এভাবেই তার পরিবারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। পরামর্শ মেনে সপ্তাহ দুই আগে পানাসক্তি ছাড়তে নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অ্যানেমিয়া ও ডিহাইড্রেশনে আক্রান্ত হয়ে বুয়েন্স আয়ার্সের ইপেন্সা ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিল। পরে তাকে লা প্লাটার অলিভিওস ক্লিনিকে স্থানান্তর করে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। ৮০ মিনিটের অস্ত্রোপচারে মস্তিষ্ক থেকে জমাটবাঁধা রক্ত অপসারণ করা হয়।
জাতীয় দল জার্সিতে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল করেছেন ম্যারাডোনা। খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপে। ৩৭ বছর বয়সে আর্জেন্টিনার জার্সি তুলে রাখেন ১৯৯৭ সালে।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে প্রায় একক নৈপুণ্যে শিরোপা জেতান ম্যারাডোনা। ফাইনালে ওয়েস্ট জার্মানিকে হারিয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে আলবিসেলেস্তেরা। আর্জেন্টিনার জেতা দুই বিশ্বকাপের দ্বিতীয়টি ছিল সেটি। নাম্বার-১০ ম্যারাডোনা ওই আসরে করেছিলেন ৫ গোল।
পরের বিশ্বকাপেও আলবিসেলেস্তেদের ফাইনালে তুলেছিলেন ম্যারাডোনা। ট্রফি হাতছাড়া হয়ে যায় সেবার। তারপরের আসর যুক্তরাষ্ট্রে, তিনিই ছিলেন দলনেতা। কিন্তু টুর্নামেন্টের মাঝপথে ফিরে আসতে হয় ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হয়ে। গ্রুপপর্বে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জিতে বাড়ির পথ ধরেন। জাতীয় দলে সেটাই শেষ ম্যাচ।
ক্লাব ক্যারিয়ারে সোনালি সময় কাটিয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলিতে। তাদের হয়ে দুবার সিরি আ ও উয়েফা কাপ জিতেছেন। শুরুটা হয়েছিল ১৬ বছর বয়সে, আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার যাত্রা কিশোরকালে।
পরে বাঁ-পায়ের জাদুতে মাতিয়ে রাখেন ফুটবলবিশ্ব। নাপোলি ছাড়াও লিওনেল মেসির ক্লাব বার্সেলোনা মাতিয়েছেন। খেলেছেন বোকা জুনিয়র্স, সেভিয়া ও নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবে।
কোচিংয়ে এসে আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন। রেসিং ক্লাব, দোরাডোস ও জিমনেসিয়ায় ছিল ক্লাব কোচিং ক্যারিয়ার।