বিধ্বংসী ইনিংসটা থামল ১৯০ রানে। ইতিহাস গড়া ব্যাটিংয়েও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে দলকে জেতাতে পারলেন না মোহামেডান অধিনায়ক রকিবুল হাসান। ৩৬৬ রান তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে যখন স্ট্রাইক পান জয়ের জন্য দরকার ৫ বলে ২৯ রান, ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁতে মাত্র ১০! ওই সময়ও দলের কথাই আগে ভেবেছিলেন রকিবুল। জয়ের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু কাজী অনিকের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মানান শর্মার তালুতে ক্যাচ তুলে দেন। ম্যাচের ভাগ্যও নির্ধারণ হয়ে যায় তখনই। তবে কয়েকটা ছক্কা মেরে জয়ের সুযোগ তৈরি করলেও ডাবল সেঞ্চুরির কথা মনেই হয়নি এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের।
ডাবল সেঞ্চুরি না হওয়ায় তাই আক্ষেপ নেই রকিবুলের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যান চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন, ‘ডাবল সেঞ্চুরি নিয়ে আক্ষেপ নেই। আক্ষেপ হেরে যাওয়ার জন্য আছে। ২০০ করার টার্গেটও ছিল না। আমি জানতাম, আমার ১৯০। কিন্তু ওই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছে, যদি আমরা শেষ ওভারে ৪-৫টা ছয় মেরে দিতাম জেতার একটা সুযোগ তৈরি হতো, ওটাই মাথার মধ্যে কাজ করেছে।’
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে আবাহনীর বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াইয়ের পর ২৭ রানে ম্যাচ হেরেছে মোহামেডান। সাড়ে তিনশ পেরোনো লক্ষ্যের পেছনে ছুঁটে তারা থামে ৩৩৯ রানে। বেশ কয়েক বছর পর আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে জমজমাট লড়াইয়ের দেখা মিলল। রকিবুল জানালেন এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচ, ‘আমার খেলা অন অব দ্যা বেস্ট ম্যাচ ছিল এটি।’
পাহাড়সমান রান তাড়া করতে নেমে ৩৮ তুলতেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে মোহামেডান। সেখান থেকে শ্রীলঙ্কান চারিথ আসালঙ্কা ও রকিবুল হাসান ১৭৫ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন। রকিবুল টিকে থাকলেও আর কোন বড় জুটি হয়নি।
হারের পেছনে বড় জুটি না হওয়াকেই দায়ী করলেন রকিবুল, ‘বড় একটা স্কোর হয়েছে। সেটা তাড়া করতে গিয়ে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালোই খেলেছে। এত বড় ম্যাচে ‘ডু অর ডাই’ চান্স নিতেই হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের ভালোই যাচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমি আর আসালঙ্কা ছাড়া আর কেউ পার্টনারশিপ দিতে পারিনি। যার কারণে শেষ দিকটা কঠিন হয়ে গেছে। টিম হিসেবে ভাল ব্যাটিং করতে পারিনি এটাই হারের কারণ।’
আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথে রকিবুল ছাড়াও সেঞ্চুরি পেয়েছেন আবাহনীর দুই ক্রিকেটার। লিটন কুমার দাস ১৩৫ ও নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেন ১১০ রানের ইনিংস। তাতেই বড় পুঁজি পায় আবাহনী। ভালো ব্যাটিংয়ের জন্য আবাহনীর দুই সেঞ্চুরিয়ানকেও অভিনন্দন জানাতে ভুললেন না মোহামেডান অধিনায়ক।