আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজ মোল্লার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে অনুষ্ঠিত এক ছাত্র সমাবেশে এই আহ্বান জানান ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবন সংলগ্ন হাফিজ চত্বরে সমাবেশটির আয়োজন করে ছাত্র ফেডারেশন।
ছাত্র ফেডারেশেনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশবিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রিচার্ড, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক ইশতিয়াক।
এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর।
সামিনা লুৎফা বলেন, ২০১৮ সালে এক গবেষণায় দেখা গেছে, হলে অবস্থানকারী ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী নিরাপদ বোধ করে না। হলে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতারা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তথাকথিত আদব-কায়দা শেখানোর নামে গেস্টরুমের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। হাফিজুর মোল্লা এসকল শিক্ষার্থীদের প্রতিচ্ছবি। আর যেন কোনো হাফিজুর এভাবে অকালে ঝরে না যায় সেজন্য প্রশাসনকেই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে নুরুল হক নুর বলেন, ‘সকল ছাত্রসংগঠন প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে চায়। তবে এজন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত এবং ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে করতে হবে। আর যাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা কিংবা ছিনতাইয়ের অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং হল থেকে অছাত্র-বহিরাগত সন্ত্রাসীদের তাড়াতে হবে। কিন্তু যদি আপনারাই ‘ধাওয়া খেয়ে চলে আসেন’ তাহলে কিসের ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবেন? আমরা তো জসীম উদদীন হলে দেখেছি যে অছাত্রদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে নিজেরাই ধাওয়া খেয়েছেন। তাহলে কিসের ডাকসু? হলের মধ্যে তো ঐ অছাত্রদেরই আধিপত্য। তাহলে কিভাবে? কোন বিবেকে? আপনারা বলেন, হলের মধ্যে এতোদিন নির্বাচন হয়ে আসছে, হলের মধ্যেই হবে।’
এছাড়া সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশন কয়েকটি দাবি জানায়। সেগুলো হলো- ১ম বর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট প্রদান করা, লাইব্রেরি ২৪ ঘন্টা খোলা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা, বর্ধিত হল ফিসহ সকল অযৌক্তিক ফি বাতিল ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, গেস্টরুম ও গণরুম নিপীড়ন বন্ধ করা, বাসের রুট বৃদ্ধি ও রাত নয়টা পর্যন্ত বাস চালু রাখা এবং নারী শিক্ষার্থীসহ সকলের জন্য নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা।
সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।