বেফাঁস মন্তব্য করে বেশ ঝামেলায় পড়ে গেছেন জিওফ বয়কট। নারীদের ছেলেদের ক্রিকেটে ধারাভাষ্য দেয়া উচিত নয়, এমন কথা লিখে চারিদিক থেকে দুয়ো শুনছেন ঠোঁটকাটা পরিচিতি থাকা ব্রিটিশ কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন লিসা স্টলেকার। বয়কটের কথার জবাবে পাল্টা ও কঠিন উত্তরই দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ নারী ক্রিকেটার।
সম্প্রতি বয়কটের সঙ্গে ১৪ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ব্রিটিশ ক্রিকেটিং ব্রডকাস্ট। এখন থেকে আর তাদের ধারাভাষ্য কক্ষে দেখা যাবে না তাকে। সেজন্যই মনে হয় হাতে কলম তুলে নিয়েছেন বয়কট, টেলিগ্রাফ পত্রিকার জন্য লিখেছেন কলাম। ধারাভাষ্য ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পেছনে নতুন ও উঠতি, বিশেষ করে নারী ধারাভাষ্যকারদের যেন দোষারোপ করেছেন তিনি।
নিজের কলামে বয়কটের মন্তব্য ছিল, টেস্ট ম্যাচে ধারাভাষ্যের মাইকটা তাদের হাতেই যেন তুলে দেয়া হয় যাদের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। নারীরা যেন টেস্টে ধারাভাষ্য দিতে না আসেন সেই অনুরোধও উঠে এসেছে কলামে।
‘আপনাকে খেলাটির চাপ, আবেগ ও কৌশল সম্পর্কে জানতে হবে। এটা আপনি বই কিংবা ক্লাব ক্রিকেট, দ্বিতীয় একাদশ আর শ্রদ্ধার সঙ্গে বলছি নারী ক্রিকেট খেলে শিখতে পারবেন না।’
‘ভালো হয় নারীরা তাদের খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকুক। ছেলেদের ক্রিকেটের শক্তি এবং গতির সঙ্গে এ একদমই বেমানান। মেয়েরা চাইলে মন্তব্য, উপস্থাপক, সাংবাদিক হিসেবে এগিয়ে আসতে পারে।’
এমন মন্তব্য যে নারী ক্রিকেটার, বিশেষ করে যারা ধারাভাষ্যে নাম করছেন তাদের ভালো লাগবে না সেটাই স্বাভাবিকই। তাদের হয়েই বয়কটকে কড়া জবাব দিতে এগিয়ে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ৮ টেস্ট, ১২৫ ওয়ানডে ও ৫৪ টি-টুয়েন্টি খেলা লিসা স্টলেকার। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে তার মন্তব্য, ‘এখানে শক্তির কোনো ব্যাপার নেই।’
‘আরেকটা কথা হল, ছেলেদের ক্রিকেটের মতো নারীদের ক্রিকেটও এখন দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই, ছেলেদের আর মেয়েদের ক্রিকেটে পার্থক্য বোঝানোর কোনো দরকার নেই। কারণ এটা কোনো কালেই এক ছিল না।’
‘তার কথার খাতিরে পাল্টা বলতে হয় যে, তাহলে নারীদের ক্রিকেটেও ছেলেদের ধারাভাষ্য দেয়া উচিত নয়। কারণ তারাও কোনোদিন নারীদের ক্রিকেট খেলেনি।’
‘ক্রিকেট এমন এক খেলা যা লিঙ্গ, আকার-উচ্চতা ভেদে সবার জন্য। সবাই যখন খেলাটাকে ভালোবাসে তবে কেনো সবাই ধারাভাষ্য দিতে পারবে না। বিশেষ করে অন্য পেশার তারাও! আমরা ভিন্ন দেশের, ভিন্ন লিঙ্গের যা-ই হই না কেনো, সবাই একরুমে বসে রেডিওতে ধারাভাষ্য শুনি।’