সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চূড়ান্ত অভিশংসন করতে জো বাইডেন প্রশাসন সিনেটে শুনানির জন্য উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি।
বিসিসি জানিয়েছে, ট্রাম্পের অভিশংসন বিষয়ে জেন সাকি বলেন, মার্কিন নাগরিকদের মত সিনেটও এক সাথে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারে। তবে এই মুহূর্তে নতুন প্রেসিডেন্টের নজর রাজনীতির চেয়ে জনগণের সমস্যা সমাধানের দিকে।
সম্প্রতি দেশটির আইনসভা ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ‘বিদ্রোহে উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পকে অভিশংসিত করে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ। তবে দেশটির সংবিধান অনুযায়ি চূড়ান্ত অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন তখনই হয়, যখন সিনেট তা অনুমোদন করে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র সপ্তাহ ব্যবধান থাকায় তা তখন আর এগোয়নি। ট্রাম্পই থেকে যান হোয়াইট হাউজে।
সেই পরিস্থিতিতে বুধবার ক্ষমতা ছেড়েছেন ট্রাম্প, আগামী ৪ বছরের জন্য নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন বাইডেন। তাহলে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা কী?
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে: ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনার পর সুষ্ঠভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল সিনেটের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এখন সুবিধাজন সময়ে দ্রুততার সঙ্গে সিনেটে উঠবে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রস্তাব।
সেখানে যদি তাকে অভিশংসনের পক্ষে সিনেট মত দেয়, তবে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ট্রাম্পের অংশগ্রহণের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে।
আবার সিনেটে ট্রাম্পে অভিশংসন প্রক্রিয়া চাইলেই সম্ভব, বিষয়টা এমনও নয়। সিনেটে সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাট শিবির। তাই ট্রাম্পকে অভিশংসিত করতে চাইলে অন্তত ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরকে ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট দিতে হবে। তা না হলে অভিশংস প্রস্তাব গৃহীত নাও হতে পারে।
তবে ট্রাম্পের শেষ সময়ের বিতর্কিত কার্যকালাপে বিরক্ত অনেক রিপাবলিকান নেতা। দলটির অনেক সিনিয়র নেতাকে প্রকাশে ট্রাম্পের সমালোচনাও করতে দেখা গেছে। আবার কংগ্রেসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনে পক্ষে ১০ জন রিপাবলিকান সদস্যকে ভোট দিতে দেখা গেছে।
তাই ট্রাম্পের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা জানার জন্য আরও ১ মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে আভাস দিয়ে রাখা হচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পই একমাত্র প্রেসিডেন্ট, যিনি কংগ্রেস হাউজে দ্বিতীয় দফায় অভিশংসিত হয়েছেন। প্রথম দফায় ২০১৯ সালে কংগ্রেস ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাশ করে। কিন্তু সিনেটে গিয়ে তা আটকে যায়। কারণ সেই সময় সেখানে রিপালিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল।
এর আগে ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটন এবং ১৮৬৮ সালে অ্যান্ড্রু জনসনকে হাউকে অভিশংসিত করে কংগ্রেস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিনিধি পরিষদের সেই সিদ্ধান্ত সিনেটে গিয়ে আটকে যায়।