নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকে অপমান করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক হাত নিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। সেখানে ট্রাম্প ‘মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য’ বলে মন্তব্য করার পাশাপাশি আন্ত-কোরীয় সীমান্ত ভ্রমণ বাতিল করায় তাকে ‘কাপুরুষ’ বলেও অভিহিত করা হয়।
ক্ষমতাসীন দলের পত্রিকা রোডং সিনমান এক সম্পাদকীয়তে ট্রাম্পের সাউথ কোরিয়া সফর বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে। এশিয়ার ৫টি দেশে ‘ম্যারাথন সফরের’ অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে সাউথ কোরিয়া যান ট্রাম্প। সিউলে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে এক বক্তব্যে নর্থ কোরিয়ার ‘নির্মম একনায়কতন্ত্রের’ তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
নর্থ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দেশগুলোকে একাট্টা করাই ট্রাম্পের এই এশিয়া সফরের লক্ষ্য বলে বিবেচনা করা হয়।
গত ৩ নভেম্বর স্থানীয় সময় সকাল থেকে শুরু করা তার এ সফর গতকাল ১৪ নভেম্বর শেষ হয়। সফরে তিনি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনে গেছেন।
“সবচেয়ে নিকৃষ্ট যে অপরাধটির জন্য তিনি কখনোই ক্ষমা পাবেন না, তাহলো তিনি চরমভাবে সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে আঘাত করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।” সম্পাদকীয়তে বলা হয়।
আরও বলা হয়, “তার জানা উচিত, তিনি শুধুমাত্র একজন ঘৃণ্য অপরাধী, যাকে কোরিয়ান জনগণ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের সাথে কিম জং উনের বাকযুদ্ধ চলছে। এর তিক্ততাও দিনে দিনে বাড়ছে। ব্যক্তিগত আক্রমণ, সামরিক হামলার হুমকি এবং বৈরীতা ছড়িয়ে পড়ার উদ্বেগও ক্রমবর্ধমান।
এশিয়ার সফরের শেষ দিকে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় থেকে ট্রাম্পের এক টুইট এই বাকযুদ্ধকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যায়। কিমের উচ্চতা ও ওজন নিয়ে বিদ্রুপ করেন ট্রাম্প।
“কিম জং-উন কেন আমাকে ‘বুড়ো’ বলে অপমান করে, যেখানে আমি তাকে কখনোই ‘খাটো এবং মোটা’ বলি না?”
কিম পরিবারের শাসনামলে এর সদস্যরা দেশটিতে- অতীতে এবং বর্তমানে- প্রায় ইশ্বরের মতোই ক্ষমতা উপভোগ করে। তাই এর সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে উপহাস বা অপমান করলে এর প্রতিক্রিয়াও অনুমেয়। যার এক রূপ দেখা গেলো সম্পাদকীয়টিতে।
দুই কোরিয়াকে বিভক্তকারী ডিমিলিটারাইজড জোন (ডিএমজেড) সফরে ট্রাম্পের ব্যর্থতার কথাও বলা হয় সেখানে। সচরাচর জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তারা সাউথ কোরিয়া ভ্রমণের সমাপ্তি টানেন এখান থেকেই।
ট্রাম্পের হেলিকপ্টার ডিএমজেড-এ যাওয়ার ৫ মিনিট পরেই ‘খারাপ আবহওয়ার’ জন্য ফিরে আসে। এই ব্যাখ্যাকেও প্রত্যাখান করেছে পত্রিকাটি।
“এটা আবহাওয়ার বিষয় ছিলো না। আমাদের সেনাবাহিনীর প্রখর দৃষ্টির সম্মুখিন হওয়ার ভয় ছিলো তার।”