বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ এরই মধ্যে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনেছে। সেন্টমার্টিনে গাছের নিচে চাপা পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে রক্ষা পেতে শেষ রাত থেকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ভিড় জমাচ্ছে উপকূলবাসী।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি বুধবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ধীরে ধীরে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়টি দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এর মধ্যে কোমেন এর অগ্রভাগ সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনেছে। প্রবাল দ্বীপ, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপে বেশ কিছু গাছ পালা ও বসত বাড়ি উপড়ে পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। সাগর উত্তাল থাকায় সব ধরনের জাহাজ, নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। কক্সবাজারের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
চট্টগ্রামের ৫ টি উপজেলার স্কুল কলেজ ও সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে ৫ টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। বন্দর কর্তৃপক্ষও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর কক্সবাজারে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং চলছে মঙ্গলবার রাত থেকেই। ভোর রাত থেকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছেন উপকূলবাসী। কক্সবাজারে পাহাড়ের নিচে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা সকল মাছ ধরা ট্রলার ও সমুদ্রগামী জাহাজগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।