কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে পৃথক পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক রোহিঙ্গা নারীসহ ৩ জন ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছেন।
রোববার ভোররাতে সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ উপজেলার মৌলভীবাজার এলাকায় পুলিশের সাথে ও একই উপজেলার দমদমিয়া নাফনদীর ওমরখাল এলাকায় বিজিবির সঙ্গে এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৬টি এলজি পিস্তল, ২০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১৮টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ ও বিজিবি।
নিহত ইয়াবা কারবারিরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের আলী আকবর পাড়া এলাকার মিয়া হোসনের ছেলে মাহামুদুর রহমান (২৮) ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আফছার (২৫) ও লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি/৬ ব্লকের বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আকতার (২০)।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রোববার রাতে একদল ইয়াবা কারবারি ইয়াবা বিক্রির খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলার মৌলভীবাজার এলাকায় অভিযানে যান। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।
আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছুড়ে। এভাবে প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলি চালায়। বেশ কিছুক্ষণ গুলি চালানোর পর ইয়াবা কারবারিরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ দুইটি দেহ পাওয়া যায়।
তাদের টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক কক্সবাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মরদেহ দুইটি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় টেকনাফ থানা পুলিশের একজন এসআইসহ তিন সদস্য আহত হয়েছে। এরা হলেন এস আই দীপক বিশ্বাস, সহকারি উপ-পরিদর্শক এএসআই আমির ও কনেষ্টবল শরিফুল।
তাদের টেকনাফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকসহ ৫/৬টি মামলা রয়েছে উক্ত ঘটনায় টেকনাফ থানায় পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে।
অপরদিকে, টেকনাফ ২নং বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানিয়েছেন, রোববার ভোররাত আনুমানিক ৪টার দিকে টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া ওমরখাল নাফনদী এলাকায় টহলে বের হন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) সদস্যরা। এসময় কিছু লোক মিয়ানমার থেকে ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় থামার জন্য সংকেত দেয়।
কিন্তু, বিজিবির সংকেত অমান্য করে উল্টো বিজিবির টহলদলের উপর অতর্কিত গুলিবষর্ণ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। এতে বিজিবি টহলদলের একজন সদস্য আহত হয়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি টহলদল কৌশলগত অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলিবর্ষণ করে।
উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১০-১৫ মিনিট গুলি বিনিময় চলে। অস্ত্রধারী চোরাকারবারিরা গুলি করতে করতে খালের কিনারা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুলির শব্দ থামার পর ভোরের আলোতে টহলদলের সদস্যরা এলাকা তল্লাশি করে ১ জন নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নৌকার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে।
পরে স্থানীয়রা তাকে রোহিঙ্গা নারী বলে সনাক্ত করে। এসময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩ টি লোহার ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মৃতদেহটি টেকনাফ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্ত করার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বিজিবির ওই কর্মকর্তা।