বাংলাদেশের পোশাক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদনে বিস্ময় ও হতাশা জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ পোশাক শিল্প প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সংস্থা বিকেএমইএ। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের নীল নকশা বাস্তবায়নের অংশ হতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
শনিবার প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিকেএমইএ দাবি করে, টিআইবির গবেষণাপত্রটিতে তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত গবেষণা পদ্ধতি এবং তথ্যের উৎস সম্পর্কে যথাযথ বর্ণনা দেয়া হয়নি। মাত্র ৭০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সাড়ে ৫ হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রায়োগিক ও কাঠামোগত কার্যক্রমের চিত্র গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে।
গবেষণার জন্য কোন ধরণের পোশাক কারখানা কয়টি করে নমুনা হিসেবে নেয়া হয়েছে তা-ও প্রতিবেদনের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। অঞ্চলভিত্তিক কারখানা ও বায়ার নির্বাচনেরও কোনো তথ্য নেই বলে জানায় বিকেএমইএ।
গবেষণার কোনো পর্যায়েই, এমনকি ফলাফল পাওয়ার পরও টিআইবি বিকেএমইএ বা বিজিএমইএ’র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেনি বলে বিকেএমইএ অভিযোগ করে। ‘বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে’ এমন গবেষণা চালানোর জন্য টিআইবি সরকারের অনুমোদন নিয়েছিলো কিনা বা এর আর্থিক পৃষ্ঠপোষক কে বা কারা ছিলো সে বিষয়ে স্বচ্ছতা দাবি করেছে সংস্থাটি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিআইবির কার্যক্রম নিয়ে বিকেএমইএ’র কোনো অভিযোগ নেই। বরং বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে টিআইবির বিভিন্ন গবেষণাকে সাধুবাদ জানিয়েছে সংস্থাটি।
‘তবে ‘সুশাসনের দায় আমাদের এবং মুনাফা স্বচ্ছ করার জন্য সুশাসন দরকার’ – এই ধরণের মানদণ্ড ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদের মূল হাতিয়ার তৈরি পোশাক শিল্পের ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে এ ধরণের গবেষণা প্রতিবেদন তুলে দিয়ে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতি করার এবং পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং ইমেজ’কে ধ্বংস করার টিআইবির এই সহায়তামূলক প্রক্রিয়া (ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়) বিকেএমইএ কোনোভাবেই সমর্থন করতে পারে না।’
দেশের পোশাক শিল্পখাতের বিরুদ্ধে চলমান দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র রুখতে ওই খাত সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তর-অধিদপ্তরের সহযোগিতা চেয়েছে বিকেএমইএ। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকেও প্রতিবেদনটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা কামনা করেছে।