টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান মিল্টন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান মিল্টন সিদ্দিকী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার এলেঙ্গা রিসোর্টে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধু বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে কালিহাতী থানায় নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধু জানান, বেশ কিছুদিন ধরে তার বাবার বাড়ির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশির সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। মঙ্গলবার সেই বিরোধ নিয়ে শালিসী বৈঠকের কথা বলে মনির নামের এক ব্যক্তি তাকে তার নানার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে আসে।
তার আগে মনির তাকে জানায়, তার মা তাকে কালিহাতীর নাগবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে যেতে বলেছে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদে না নিয়ে মনির তাকে এলেঙ্গা রিসোর্টে নিয়ে যায়। সেখানে নাগবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান মিল্টন সিদ্দিকীর কাছে তাকে দিয়ে চলে আসে।
পরে মিল্টন তাকে রিসোর্টের একটি কক্ষে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে রিসোর্টের সামনের ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ফেলে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে সে তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করলে তার মা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করেন।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধুর মা জানান, জমি নিয়ে সালিশ-মিমাংসা করার কথা বলে ইউপি চেয়ারম্যান তার মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান।
নাগবাড়ী ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য আ. হালিম বলেন, ধর্ষিতার মায়ের ফোন পেয়ে তিনি হাসপাতালে এসেছেন।
তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের এটি প্রথম ঘটনা নয়। এর আগেও তিনি একাধিকবার নারীসহ জনতার হাতে ধরা পড়েছেন। একাধিকবার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে।তিনি এ জঘন্যতম ঘটনার জন্য ওই ইউপি চেয়ারম্যানের শাস্তি দাবী করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান মিল্টন সিদ্দিকী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আমি একজন জনপ্রতিনিধি। আমি এই সংবাদ পেয়ে হতবাক।
এ ব্যাপারে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার আখেরুজ্জামান জানান, টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধুর অভিযোগপত্র নেয়া হয়েছে। রাতেই এ ব্যাপারে থানায় মনির ও মিল্টন সিদ্দিকীকে আসামী করে একটি নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৫।
মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান ওসি খন্দকার আখেরুজ্জামান।
হাসপাতালের গাইনী বিভাগের চিকিৎসক রেহেনা পারভীন বলেন, ভিক্টিমের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি, তবে তার ডাক্তারি পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।