পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আরপিসিএল পুলিশ ক্যাম্পের কনস্টেবল আল আমিন সততার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। ডিউটি চলাকালীন ৩০ হাজার ৫০০ টাকার একটি বান্ডিল পেয়ে তিনি প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ২৩ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
কনস্টেবল আল আমিন জানান, প্রতিদিনের মতো ডিউটি করছিলাম। ডিউটিতে হাঁটার সময় টাকার একটি বান্ডিল পড়ে থাকতে দেখে ডিউটি ইনচার্জকে জানাই। তিনি টাকাগুলো তুলে নিতে বলেন। এরপর প্রকৃত মালিককে খুঁজতে থাকি। টাকার মালিককে না পেয়ে সেখানকার একজন সিকিউরিটি গার্ডকে বলি কারও টাকা হারিয়ে থাকলে যেন আমাদেরকে জানায়।
‘এর কিছুক্ষণ পর সেখানকার একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্টের একজন সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আমাদের কাছে আসেন। তিনি এসে তার টাকা হারানোর কথা বলেন। এ টাকা তার কিনা তা জানতে বিভিন্ন প্রশ্ন করি। তিনি ঠিকমত বলেন যে, তার ৩০ হাজার ৫০০ টাকা হারানো গেছে এবং সবগুলো ৫০০ টাকার নোট। ইমামের কথার সত্যতা পেয়ে আমরা টাকাগুলো তাকে বুঝিয়ে দেই। তিনি টাকাগুলো পেয়ে আমাকে এবং বাংলাদেশ পুলিশকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন’, বলেন কনস্টেবল আল আমিন।
আল আমিন বলেন, এ টাকা আমি কুড়িয়ে পেয়েছি। এটা আমার টাকা না। সেজন্য আমি এর প্রকৃত মালিককে খুঁজতে থাকি। টাকাগুলো প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে পেরে আমি গর্বিত। বাংলাদেশ পুলিশে জয়েন করেছি দেশ ও মানুষের সেবা করার জন্য। আমি যেন সবসময় এভাবেই মানুষের পাশে থেকে বাংলাদেশ পুলিশের নাম উজ্জ্বল করতে পারি, এটাই আমার প্রার্থনা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় টাকা হারানো সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে আমার ৩০ হাজার ৫০০ টাকা হারিয়ে যায়। পরে সেখানে এসে খোঁজাখুঁজি করলে পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসেন। তাদের কাছে টাকা হারিয়ে যাওয়ার কথা বললে বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ চান। পরে ঠিকমতো তথ্য দেওয়ার পর তারা আমার টাকা ফিরিয়ে দেন। এসময় জানতে পারি আল আমিন নামের একজন পুলিশ সদস্য টাকাগুলো পেয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্য যদি এমন হয়, তাহলে বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে।
কলাপাড়া আরপিসিএল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের ক্যাম্পের একজন কনস্টেবলের এমন সততায় আমি মুগ্ধ। এটা যদিও একজন পুলিশ সদস্যের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে, তবুও তিনি টাকাগুলো ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন। এটাই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ পুলিশের প্রকৃত চিত্র। প্রজেক্টের পক্ষ থেকে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। আমরাও তার এ সততাকে সম্মান জানিয়ে পুরস্কৃত করব।
পুলিশ সদস্য আল আমিনের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশায়। তিনি ২০২০ সালের মার্চ মাসের ৪ তারিখে বাংলাদেশ পুলিশে একজন কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেন।