বাঙালীর গর্বের, গৌরবের মাস মার্চ। এই মাসেই ঘোষিত হয় বাঙালীর স্বাধীনতা, বাংলাদেশ নামের একটি নতুন দেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালী ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তির মরনপণ লড়াইয়ে। একটি ভাষণ বদলে দেয় পুরো জাতিকে, গড়ে দেয় ইতিহাস, অদম্য বাঙ্গালী সাহসী হয়ে ওঠে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায় খালি হাতে লড়াইয়ের।
৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের প্রভাব টের পেয়ে ভাষণ টেলিভিশন ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচারে বাধা দেয় পাকিস্তান সামরিক জান্তা। সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পাকিস্তান রেডিওর ঢাকা কেন্দ্রের কয়েকজন দুঃসাহসী কর্মকর্তা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৮ মার্চ সকাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্প্রচার করেছিলেন।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার এ গ্রামটির নাম ঝুটিগ্রাম। ১৯৭০ ও ৭২ সালে গোপালগঞ্জ-৫ আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হওয়া এ গ্রামের মোহাম্মদ আবুল খায়ের বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের একমাত্র পেশাদার রেকর্ডধারী। রেডিও টেলিভিশন দখল করে যখন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি মুছে দেয় জান্তা সরকার, তখন ঢাকা রেডিও রেকর্ড করা একমাত্র পেশাদার রেকর্ডটি সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় পালিয়ে যান মোহাম্মদ আবুল খায়ের।
কলকাতার একটি রেকর্ড কোম্পানী বিনামূল্যে এ ভাষণের ৩ হাজার কপি করে দেয় তাকে। ওই রেকর্ডটি তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে এবং দেশে বিদেশে সরবরাহ করেন।
৮ মার্চ সংগঠনের নাম থেকে পূর্ব পাকিস্তান শব্দ দুটি ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রলীগ। বন্ধ করে দেয়া হয় পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন, পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত বাজানো এবং সিনেমা হলে ঊর্দূ ছবির প্রদর্শনী।