জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে গড়ে প্রতিদিন একশ শিশু ভর্তি থাকছে জয়পুরহাটে আধুনিক জেলা হাসপাতালে। যাদের অধিকাংশই টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত। গত ১৮ দিনে প্রায় এক হাজার শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক রোগী এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের অভিযোগ শিশু ওয়ার্ডে ওইসব শিশুদের জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে তাদের চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি হঠাৎ করেই শিশু রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ২২ বেডের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও আক্রান্ত শিশু রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিক থেকে এর প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রায় প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। পানি ও খাবারে সমস্যার কারণেই পানিবাহিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে বলে দাবি শিশু বিশেষজ্ঞের। হাসপাতালে ভর্তির পর টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন।
হাসপাতালেন চিকিৎসা নিতে আসা জয়পুরহাট সদর উপজেলার সগুনা গ্রামের ৯ বছরের শিশু শাহানা ও পাঁচবিবি উপজেলার জীবনপুর গ্রামের সাদ্দামের অভিভাবকরা জানান, টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত সাতদিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। তাদের এলাকার প্রায় শিশুরা টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। কেউ হাসপাতালে আসছে, আবার কেউ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জানান, এই টাইফয়েড রোগ মুখের মাধ্যমে খাবার ও পানির সঙ্গে ছড়ায়। এই প্রাদুর্ভাবটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। পানি ও খাবারে সমস্যার কারণেই পানিবাহিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশ বেশি। গত দুই সপ্তাহে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক হাজার শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কয়েকদিনের মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।