চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর এখনই সময়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জ্বালানি তেলের ‍দাম না কমানোর কথা বললেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাম কমানোর এখনই উপযুক্ত সময়। এতে সরকারের প্রতি জনগণের
আস্থা বাড়বে। পরে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো যেতে
পারে।

বিশ্ব বাজারের তেলের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে
দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমানো উচিত মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ
চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক
বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দর বেড়ে ১২২ ডলারে ওঠার পর বাংলাদেশেও
দাম বাড়ানো হয়। সেই হারে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি
তেলের দাম পড়তে পড়তে ৪০ ডলারের নিচে নামলেও বাংলাদেশ সরকার দাম সমন্বয় করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম না কমায় দেশের অর্থনীতি বঞ্চিত হচ্ছে, উৎপাদনে গতিশীলতা থেমে আছে।

জ্বালানি তেলের দাম সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছিলো ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি। এরপর বিশ্ব বাজ‍ারে তেলের দাম অনেক কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) চার হাজার কোটি টাকার ওপরে মুনাফা করেছে।

তবে বিপিসি আগের বছরগুলোতে ভর্তুকি দিয়ে তেল বিক্রি করায় যে ধার-দেনা হয়েছে
গত তিন বছরে তা শোধ করা হয়েছে। এরপরও বিপিসির ঋণের ১৫-১৬ হাজার কোটি টাকা
শোধ করা বাকি আছে বলে বুধবার জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন,
বিপিসির ধার-দেনা শোধ হলে প্রয়োজনে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে।।

তবে বিপিসি’র ‍ঋণের টাকা সম্পর্কে আনু মুহ‍াম্মদের দাবি: এখানে হিসাবের ফাঁক ফোকড় ও গণ্ডগোল রয়েছে।

বাম ঘরানার আনু মুহাম্মদের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও বাজার অর্থনীতির সমর্থকরাও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে তার সঙ্গে একমত।

তাদের একজন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম অনেক আগেই কমানো উচিত ছিলো। পেট্রোল-অকটেনের দাম অর্ধেক করা প্রয়োজন ছিলো। ফার্নেসের দামও কমিয়ে দেওয়া উচিত। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমে যাবে।

তিনি বলেন, এখনই জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুবর্ণ সময়। জ্বালানি তেলের দাম কমলে সরকারের প্রতি সর্বস্তরের জনগণের আস্থা আরো বেড়ে যাবে।

বিপিসির লাভ-লোকসান নিয়ে মোল্লাহ মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন বলেন, বিপিসির আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা সঠিকভাবে নিরীক্ষার প্রয়োজন। জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের জন্য একটি তহবিলও গঠন করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

সঙ্গে তিনি এও বলেন: আমি মনে করি সব ধরনের জ্বালানির দাম বাজারের উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত।

সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে জ্বালানি খাতে দেশের একমাত্র পত্রিকা এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সম্পাদক বলেন, সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ৪৮ ঘন্টা আগে বলেছিলেন, জ্বালানি তেলের দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমানো হবে। পরে আরো উচ্চ পর্যায় থেকে তা নাকচ হয়ে যায়।

তিনি বলেন: এরকম কথা এবং আচরণ সাধারণ মানুষের কাছে অগ্রহণযোগ্য।