বয়সসীমা ৪০ থেকে ৩৫ বছর করায় দেশের আরও তিন কোটি ৪১ লাখ মানুষ করোনার ভ্যাকসিন পাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাতে বয়সী এবং ঝুঁকিপূর্ণদের ভ্যাকসিনের বাইরে রেখে এবং জেলাশহরগুলোতে ভ্যাকসিন দেওয়ার হার না বাড়ানো গেলে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু কমানো যাবে না।
সোমবার দেশে একদিনে করোনাতে রেকর্ড ১৬৪ জনের মৃত্যু দেখেছে দেশ। এর মধ্যে ৮৩ জনের বয়স ষাটের বেশি। আর খুলনা বিভাগে সব্বোর্চ ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর ময়মনসিংহ মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫৬ জনের। এই অবস্থায় উপজেলা পর্যায়ে চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দিয়ে জেলাপর্যায়ে মৃত্যু হার কমাতে চায় সরকার।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মহামারী থেকে উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হচ্ছে সবার ভ্যাকসিন গ্রহণ করা। বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় ৬৩০টি কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা যাচ্ছে।
দেশের প্রায় ৫০টি অঞ্চল করোনার মৃত্যু ও সংক্রমণ জটিলতায় আক্রান্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বলছে, দেশে করোনার মৃত্যু ও সংক্রমণের ৫০ শতাংশই ঘটছে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলাশহরে।
বিএসএমএমইউয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মো. সায়েদুর রহমান বলেন, জেলাগুলোতে ১২০০ থেকে ১৫০০ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ১৫ লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র এই কজন করে ভ্যাকসিন পেয়েছেন।
এই অবস্থায় দেশে করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণের বয়সসীমা শিথিল করাতে অপেক্ষাকৃত তরুণ জনগোষ্ঠী করোনার ভ্যাকসিন পাবার আওতায় আসবে। তবে জনস্বাস্থ্য ও ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সী ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীই করোনার মৃত্যু ঝুঁকিতে। আর ভ্যাকসিন দেওয়ার মূল উদ্দেশ্যই হলো মৃত্যু হার কমানো একই সাথে আক্রান্তদের রোগ জটিলতা কমিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বা হাসপাতালের চাপ কমানো। তাই ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে যতটা দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে।
মো. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যু কমানো। তাই বেশি প্রাণ হারাচ্ছে যারা তাদের আগে ভ্যাকসিনেটেড করতে হবে। ৯০ ভাগ মানুষ মারা যাচ্ছে ৪০ এর বেশি বয়সী। আগে তাদের ভ্যাকসিন দিতে হবে। ৭০ ভাগ মানুষ মারা যাচ্ছে ৫০ বছরের বেশি বয়সী। এমনটা করা হলে প্রায় ৯৯ ভাগ মৃত্যু কমে যাবে।
গণনিবন্ধনের মাধ্যমে একই অঞ্চলে একই সাথে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর আওতা বাড়িয়ে ভাইরাসের নতুন ধরণ ঠেকানো সম্ভব বলছেন বিশেষজ্ঞরা।