করোনার ক্ষতি সামলে উঠতে প্রান্তিক চাষিদের জন্য সরকার ৫ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করেছিল সরকার, সেখান থেকে ঋণ পাওয়ার সময় আরও ৩ মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফলে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এই ঋণ বিতরণ করতে পরবে ব্যাংকগুলো। আগে সময়সীমা ছিল মার্চ পর্যন্ত।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাড়ানো হলো ঋণ বিতরণের সময়সীমা।
ঋণ বিতরণের সময়সীমা ছাড়াও এবার ঋণের সীমাও বাড়ানো হয়েছে।
কোনো একক খাতে ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ শতাংশ। আগে যা ছিল ৩০ শতাংশ।
১৮ মাস (৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ) মেয়াদী এ ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৪ শতাংশ।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, কৃষি খাতের বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণের সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলো।
আগে বিশেষ এ তহবিলের ঋণ বিতরণের সময় সীমা ছিল চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
এর আগে গত বছরের ১২ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সে করোনাভাইরাসে কৃষি খাতের ক্ষতি মোকাবিলায় কৃষকের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পরই কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন ও পরিচালনার নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১৩ এপ্রিল ওই ঋণের জন্য যে নীতিমালা ঘোষণা করেছিল তাতে বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ঋণ পাওয়া যাবে।
কিন্তু ঋণ বিতরণ আশানুরূপ না হওয়ায় ২০ সেপ্টেম্বর ওই সময়সীমা তিন মাস বাড়িয়ে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। পরে আরও দুই দফা বাড়িযে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এ তহবিল থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।
এ সময়ের মধ্যে এক লাখ ৫১ হাজার ৭১৭ জন কৃষক এ ঋণ পেয়েছে। যা মোট প্রণোদনা ঋণের ৭১ শতাংশ।
ঋণ বিতরণের খাতগুলো হলো- শস্য ও ফসল খাত ব্যতীত কৃষির অন্যান্য চলতি মূলধন নির্ভরশীল খাত (হর্টিকালচার অর্থাৎ মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাত)।
তবে কোনো একক খাতে ব্যাংকের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ঋণের ৩০ শতাংশের বেশি ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। নতুন নির্দেশনায় এটির সীমা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে।
তাছাড়া কোনো উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কৃষকের কাছ থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য ক্রয় করে সরাসরি বিক্রি করে, তাদেরও স্কিমের আওতায় ঋণ বিতরণের জন্য বিবেচনা করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোনো উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে ৫ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করতে পারবে না।
এই ঋণের কোনো অংশের অসদ্ব্যবহারের প্রমাণ পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক সমপরিমাণ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ২ শতাংশ সুদ সহ এককালীন জরিমানা করবে।