চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জুটি ধরে খেলে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ

সেন্ট কিটসের উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়ক হবে ভেবেই টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। অধিনায়কের চাওয়াকে সম্মান জানালেন সবাই। বাংলাদেশের টপঅর্ডার এগোলো জুটি ধরে ধরে। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পেয়েছে ৩০১ রানের বড় সংগ্রহ। ৫০ ওভার খেলতে হারাতে হয়েছে মাত্র ৬টি উইকেট।

তামিম ইকবালের সেঞ্চুরির (১০৩) পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো অর্ধশতক (৬৭*) ছাড়াও সাকিব এমনকি মাশরাফীও রাখেন উল্লেখযোগ্য অবদান।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

ওয়ার্নার পার্কে জুটি বেধে ব্যাটিং করার দারুণ এক নিদর্শন দেখিয়েছে বাংলাদেশ। তামিম-এনামুলের ওপেনিং জুটিতে আসে ৩৫ রান। ১০ রান করে এনামুল সাজঘরে ফিরলে তামিম-সাকিব জুটিতে যোগ হয় ৮১ রান। তৃতীয় উইকেটে তামিম-মুশফিকের জুটির ৩৬ ও চতুর্থ উইকেটে তামিম-মাহমুদউল্লাহর ৪৮।

পরে মাহমুদউল্লাহ-মাশরাফী জুটি গড়ে উপহার দেন  মূল্যবান ৫৩ রান। সাব্বিরের সঙ্গেও মাহমুদউল্লাহ পান ২৬ রানের আরেকটি জুটি। শেষ জুটিটি (মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক) অবিচ্ছিন্ন থাকে ২২ রানে।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১১তম সেঞ্চুরি করে তামিম যখন আউট হন দলের রান তখন ২০০। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন নিয়ে মাশরাফী খেলেন ২৫ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস। সাব্বির ৯ বলে ১২ ও মোসাদ্দেক ৫ বল খেলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন।

তামিম ফর্মে ফিরতে ঈদের মধ্যেও ঘাম ঝড়িয়েছেন মিরপুরের নেটে। পরিশ্রমটা কাজে লাগছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি পান এ বাঁহাতি ওপেনার। শনিবার সেন্ট কিটসে সিরিজের শেষ ম্যাচে তামিম ১০০ বলে ছুঁয়েছেন তিনঅঙ্ক।

গায়নায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তামিম। পরের ম্যাচে করেন ৫৪।

পুরো সিরিজে ধারাবাহিকতা দেখিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় সপ্তম স্থানে উঠে এসেছেন তামিম। তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি বাবর আজমের দখলে। এ পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন সেঞ্চুরিতে করেছিলেন ৩৬০ রান। তিন সেঞ্চুরি করা আরেক ব্যাটসম্যান হলেন কুইন্টন ডি কক।

গায়নায় প্রথম ম্যাচে ২০৭ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। সেন্ট কিটসে শিরোপা নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতেও জমে গিয়েছিল তাদের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ৩৫ রানের মাথায় এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারানো টাইগাররা এগোচ্ছিল দুই সিনিয়রে ভর করেই। তবে তামিম-সাকিব জুটিতে এদিন আসে ৮১ রান। সাকিব ৩৭ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে জুটিটি।

গায়ানা আগের ম্যাচে এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট হয়ে উঠেছিল তলোয়ার। যদিও বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি এই ডানহাতি। ৯ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ২৩ রান করে ফিরেছিলেন। বেশি আগ্রাসী হতে গিয়েই বিলিয়েছিলেন উইকেট। সেন্ট কিটসে সিরিজের শেষ ম্যাচে খেলছিলেন সতর্ক হয়েই। তারপরও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।

জেসন হোল্ডারের অফস্টাম্পের একটু বাইরে করা লাফিয়ে ওঠা বল পুল করতে গিয়ে এনামুল ক্যাচ দিয়েছেন মিডঅনে। দশম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বিজয় ৩১ বল খেলে করেছেন মাত্র ১০ রান। ছিল একটি চারের মার।

দুটি করে উইকেট নিয়েছেন জেসন হোল্ডার ও অ্যাসলে নার্স।

ওয়ানডে সিরিজ জিতে গায়ানা থেকে সেন্ট কিটসে পা রাখার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। শেষ ম্যাচে তীরে এসে তরী না ডুবলে ওয়ার্নার পার্কে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে হয়ে যেত নিয়মরক্ষার বা হোয়াইটওয়াশের মিশন! টাইগার ব্যাটসম্যানরা শেষে ভজঘট পাকানোয় শনিবারের ম্যাচেই হতে যাচ্ছে সিরিজের নিষ্পত্তি। যারা জিতবে তাদের হাতেই উঠবে তিন ম্যাচ সিরিজের শিরোপা।

টেস্ট সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণে হোয়াইটওয়াশ হয়ে বাংলাদেশ দল যে সমালোচনার তীরেবিদ্ধ হয়েছিল। ওয়ানডে সিরিজ জিতলে কিছুটা হলেও মুখরক্ষা হবে সাকিব-তামিম-মুশফিকদের। গায়ানার উইকেটে স্পিনাররা সহায়তা পেয়েছেন। সাকিব আল হাসানের আশা সেন্ট কিটসের উইকেটেও পাওয়া যাবে তেমন টার্ন।

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সবশেষ সিরিজ জয় ৯ বছর আগে। ২০০৯ সালের আগস্টে জিম্বাবুয়ের সফরে ৪-১এ সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। ৯ বছর পর দেশের বাইরে আরেকটি সিরিজ জয়ের হাতছানি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দলের সামনে।

ওয়ার্নার পার্কে বাংলাদেশ সবশেষ ম্যাচ খেলেছিল ২০১৪ সালের আগস্টে। হোয়াইটওয়াশ হওয়া সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে দিনেশ রামদিন ও ড্যারেন ব্রাভোর সেঞ্চুরিতে ৩৩৮ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ৫০ ওভার খেলেও ২৪৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

টাইগারদের বিপক্ষে জয়ের পাল্লা অনেকটা ভারী ক্যারিবীয়দের। মুখোমুখি ৩০টি ওয়ানডে ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৮টি। ২০বারই দেখতে হয়েছে হারের মুখ। বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে দুটি ম্যাচ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ১২ ম্যাচের মধ্যে চারটি জয় সফরকারীদের। হার আট ম্যাচে।