ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। তার অভিনীত অসংখ্য বিজ্ঞাপন-নাটক রয়েছে দর্শকদের পছন্দের তালিকায়। শুধু ছোটপর্দা নয়, নওশাবা নিজেকে ব্যস্ত করে তুলছেন রুপালি পর্দাতেও। আজ (৮ মে) এই তারকার জন্মদিন। প্রতিবছর এই দিনটি নিজের মতো করে পালন করেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। তবে এবারই তেমনটা করতে পারেননি নওশাবা।
জানালেন, এবারের জন্মদিনে তিনি কক্সবাজার শুটিংয়ে ব্যস্ততায় ডুবে আছেন। সাগর জাহানের নির্দেশনায় ‘ফ্যাট ম্যান’ নামের একটি সাত পর্বের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন। মঙ্গলবার দুপুরে চ্যানেল আই অনলাইনকে নওশাবা বলেন: ছোটবেলা থেকে প্রতিবছর এই দিনটি আমি নিজের মতো করে কাটিয়েছি। যখন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন জন্মদিন এলে ওইদিনে ক্লাসে যেতাম না। শোবিজে কাজ শুরুর পরেও প্রতিবছর এই দিনে কোনো শুটিং করতাম না। বাসায় থাকতাম। কিন্তু এবার জীবনে এই প্রথম অন্যরকমভাবে জন্মদিন কাটাচ্ছি। আমি কক্সবাজার পড়ে আছি শুটিংয়ে। কিন্তু মনটা আছে ঢাকাতে।
তিনি বলেন: গতরাত থেকে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জার, ক্ষুদে বার্তা এবং মুঠোফোনের মাধ্যমে অজস্র জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাচ্ছি। শুধু তাই নয়, অনেকেই জন্মদিনে উপহার পাঠাচ্ছেন নওশাবার ঠিকানায়। তবে নিজের মেয়ের হাতে আঁকা একটি ছবি উপহার পেয়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন নওশাবা। বললেন, আমার মেয়ে নিজ হাতে একটি ছবি এঁকেছে। যেখানে আমি, সে পিছনে সমুদ্র, মাছ ও প্রকৃতি ফুটে উঠেছে। এই ছবিটা দেখে আমি এতো খুশি হয়েছি, বলে বোঝাতে পারবো না।
কক্সবাজারে নওশাবার সঙ্গে আরো শুটিং করছেন মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, আরফান আহমেদ, শানু ছাড়াও অনেকেই। সেখানে সবাইকে নিজের জন্মদিনে মাতিয়ে রেখেছেন নওশাবা। বলেন, এই দিনে আমি একটু বাচ্চাদের মতো আচরণ করি। সবার কাছে গিয়ে উইশ চাচ্ছি! তাছাড়া জন্মদিনের প্রথম প্রহরে শানু আমাকে চমকে দিয়েছে অদ্ভুত ভাবে। সেটা আমি ফেসবুকেও শেয়ার করেছি।
যোগ করে নওশাবা বলেন: আগামী আগস্ট মাস থেকে সিনেমার জন্য লম্বা সময় দেব। এজন্য নিজেকে একটু গুছিয়ে নিতে তার আগে সময় নিতে হবে। সেজন্য আগেই কিছু নাটকে কাজ সেরে ফেলছি। সেজন্য জন্মদিন থাকার পরেও শুটিং করছি। যাই হোক এবারের জন্মদিনটাও আমার জন্য বিশেষ স্মৃতি হয়ে থাকবে। সকলের কাছে দোয়া চেয়ে নওশাবা বলেন, ‘জন্মদিন বলে বলছি না। কেন জানি আমার কাছের মানুষ, ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষিরা আমাকে সবসময় ভালোবাসেন। তাদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। এভাবেই তাদের ভালোবাসায় বেঁচে থাকতে চাই। একই সঙ্গে আমার আগামীর জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।’
উল্লেখ্য, ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নওশাবার। শ্যামলীর আদাবরে বড় হয়েছেন। বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সেলিম উদ্দিন এবং মা নাহিদ সেলিম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে ড্রয়িং ও পেইন্টিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। অভিনয়ের প্রতি ভালোলাগা থেকে জড়িয়ে ছিলেন মঞ্চ নাটকের সাথে। তিনি ২০১১ সালে মুকুল আহমেদের পরিচালনায় ‘সোনাটা’ (Sonata) নামের মঞ্চনাটকে প্রথম অভিনয় করেন। টেলিভিশনে নওশাবার প্রথম নাটকের নাম ‘ছোটবেলা বড়বেলা’। আর তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক জুয়েল মাহমুদ পরিচালিত ‘ললিতা’।
তবে নওশাবা তারও আগে রাতারাতি তারকায় পরিণত হয়েছিলেন বাংলালিংকের ‘লেডিস ফার্স্ট’ শিরোনামের বিজ্ঞাপন দিয়ে। তারপর তিনি কাজ করেছেন গ্রামীণফোন, বিবিসি সংলাপ, নেসক্যাফে, ম্যারিডিয়ান চিপস ও টেলিটকমসহ আরো বেশ কিছু টিভিসিতে। চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন নওশাবা। সর্বশেষ ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিতে অভিনয় করে ব্যাপকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে এই সুহাসিনী।
পর্দার বাইরে দারুণ মিশুক আর হাসিখুশি স্বভাবের নওশাবা বাস্তব জীবনে এক কন্যা সন্তানের জননী। তার মেয়ের নাম প্রকৃতি, বয়স ছয় বছর। মঙ্গলময় হোক তার পথচলা, আনন্দময় থাকুক প্রতিটি মুহূর্ত, মুগ্ধতার প্রাচুর্য নিয়ে কেটে যাক নওশাবার এক জীবন।
ছবি: নওশাবার ফেসবুক থেকে সংগৃহিত