কংক্রিটের এই ঢাকা শহরে লোকসংখ্যা বাড়ছে হুহু করে। গগনচুম্বী বহুতল ভবন বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। আবাসনের জন্য নতুন নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। অধিগ্রহণ করা হচ্ছে সাধারণের বসতভিটা-জমি। উচ্ছেদ করা হচ্ছে বহু পুরাতন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা, উপাসনালয়। উপড়ে ফেলা হচ্ছে গাছপালা। ভরাট হচ্ছে জলাশয়, নদীনালা, খাল।
এভাবেই পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করে তৈরী হচ্ছে নিত্য নতুন উন্নয়ন প্রকল্প। তেমনি একটি আবাসন প্রকল্প হলো ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প’। রাজউক কর্তৃপক্ষ নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের রূপগঞ্জ থানাধীন প্রায় ৪৫০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে এই প্রকল্পের জন্য। কুড়িল বিশ্বরোডের পুর্ব দিকে নির্মিত উড়াল সেতু পার হয়ে সোজা পূর্ব দিকে এগোলেই প্রশস্ত রাস্তার দু‘পাশে বিদেশী ভাষা ও নামের আবাসন প্রকল্পের সাইনবোর্ড দেখে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে।
পুঁজিপতি, ব্যবসায়ী, আমলা, কালো টাকার মালিকদের প্লট দিতে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা সর্ববৃহৎ এ আবাসন প্রকল্পের কাজ চলছে জোরেসোরেই। তথাকথিত আবাসন প্রকল্পের আওতায় অস্তিত্বের অভিযানে নিয়োজিত সামাজিক উদ্যোগে গড়ে উঠা জিন্দাপার্ক নামক ইকোপার্কটি। প্রকল্পের উত্তর-পূর্বে ৩০ নম্বরে এর অবস্থান। এতো ছিমছাম, যেনো পরিপাটি করে সাজানো, সুপরিকল্পিতভাবে বিন্যস্ত এর নৈসর্গিক রুপ লাবণ্য ঈর্ষনীয়।
কুড়িল-বিশ্বরোড থেকে মাত্র ২৫/৩০ মিনিটের গাড়িপথ পাড়ি দিলেই নাগাল পেয়ে যাবেন এই ব্যতিক্রমী পার্কটি। ব্যতিক্রমী এজন্য যে আর দশটা পার্কের মতো এর গঠনশৈলী নয়। ওই এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জীব-বৈচিত্র রক্ষা/ সংরক্ষণ এবং সুস্থ ও নির্মল বিনোদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সামাজিক অবকাঠামোরূপে এই জিন্দাপার্কটির যাত্রা শুরু। প্রকৃতির স্বাভাবিকতা বজায় রেখে তৈরী করা হয়েছে এখানকার সব অবকাঠামো।
এখানে রয়েছে প্রায় ১০০ প্রজাতির কুড়ি হাজার গাছগাছালি। সেখানে রয়েছে ফলদ, বনজ ও বহুমূল্যের জীবনদায়ী ভেষজ- ঔষধি গাছ। রয়েছে টিলা, ছোটখাল। পার্কের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ এই তিনদিকে সুরক্ষা বেষ্টনীর মত ঘিরে রয়েছে লেক বা ছোট খালের জলধারা। মাঝে নৌকা নিয়ে ঘোরার জন্য রয়েছে গোলাকার জলাধার, মাঝখানে দ্বীপের মত জেগে থাকা মাটির বুকে ছাতাঘর। এছাড়াও এখানে রয়েছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত একটি স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিক, খেলার মাঠ, কবরস্থান, শ্মশান, ট্যুরিস্ট লজ, রেস্তোরা।
পাঁচতলা বিশিষ্ট বিশাল পাঠাগার নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। পরিকল্পনায় রয়েছে ১০০০ আসনবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মানের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তন নির্মাণেরও। কোলাহলপূর্ণ রাজধানীর অদুরেই এ যেন এক ধ্যানস্থ নিস্বর্গ। পাখির কুজন, ঝিকিমিকি জলে দুরন্তপনা বালকের ন্যায় মাছের অবাধ ছুটে চলা, গাছের ডালে ডালে হরেক রকম পাখির কলকাকলি আপনার হৃদয় মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে নিমিষেই। বুক ভরে শুদ্ধ বায়ুসেবনের সুযোগ পাবেন এখানেই।
সকাল-সন্ধ্যা এখানে গাছগাছালী জলাধার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মাটির গন্ধ শুঁকে হাটতে হাটতে হরেক রকম পাখ-পাখালির কুজন শুনতে পারবেন, পুকুরের নিস্তরঙ্গ জলে হাত পা ভিজিয়ে নিয়ে শরীর মনকে চাঙ্গা করতে পারবেন। মাত্র পাঁচ জন যুবকের নিষ্ঠা, শ্রম, সততা এবং মোটে ৬০ টাকাকে পুঁজি করে ১৯৮০ সালে যাত্রা শুরু হয় জিন্দা নামক এই পার্কটির।
প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপর অবস্থিত এই জিন্দা পার্কটির কর্মকাণ্ডে পরবর্তীতে পাশ্ববর্তী পাড়া-গ্রামের দশ সহস্রাধিক লোক পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ‘অগ্রপথিক-পল্লী সমিতি’-র সভ্যগণ স্থানীয়দের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতায় তিল তিল করে তাদের স্বপ্নের ইমারতটাকে দৃশ্যমান করে তুলছেন দেশবাসীর চোখে।
নিজেদের জমিদান, ক্রয়, পতিত কিছু ভূমিকে পরিকল্পনা অনুসারে সাজিয়ে তুলেছেন সময় ধরে, থরে থরে। জনগণের সঞ্চয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ ও বিনিয়োগকৃত পাঁচ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে নির্মিত এই পার্কটির সাথে তাদের অনেকের জীবন-জীবিকাও জড়িত। একঝাঁক উদ্যোমী, অক্লান্ত পরিশ্রমী, কর্মঠ যুবক, সহৃদয়বান ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান, অনুপ্রেরণা আর সহযোগিতার পূর্ণ রূপ হলো এই জিন্দাপার্কটি।
উদ্যোক্তাদের অন্যতম একজন সদস্য যিনি অগ্রপথিক-পল্লী সমিতির প্রতিষ্ঠাতাও তিনি হলেন মুহম্মদ তবারক হোসাইন কুসুম। কিশোর বয়সেই তিনি কোন এক নৈর্ব্যক্তিক জ্ঞানে সাথীদের নিয়ে এই বিশাল কর্মযজ্ঞের সূচনা করেন। তার ভাগের ৬০ বিঘা জমি তিনি দান করে দেন এই পার্কের নামে। সঙ্গী সাথীদেরও উৎসাহিত করেন এ কাজে। অকৃতদার জনাব কুসুম জীবন যৌবন সপে দিয়েছেন এই পার্কটির তরে। সংসার পাঁতানোর চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন পার্কটির সৌন্দর্য বর্ধনে। এজন্য তাকে আপন স্বজনদের কাছে কম হেনস্থা হতে হয়নি। কিন্তু গণমানুষের ভালবাসা, শ্রদ্ধা পেয়েছেন অফুরান। এগুলোকে সম্বল করেই তিনি এগিয়ে চলছেন।
ফুলের ছোঁয়া তার কাছে প্রেয়সীর নরম প্রবল হাতের পরশের মতই মনে হয়। পাখির গুঞ্জন তার কাছে মায়ের মধুর বাণীর মতই কানে বাজে। তাইতো উদয়াস্ত তিনি সময় কাটান এখানেই। তার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই তবুও কি সরকারের উচিৎ নয় এরকম তরুণ উদ্যোক্তাদের পুরস্কৃত করার? এহেন কর্মকাণ্ডে উচ্চে তুলে ধরলেই তো সেটার আবেদন ছড়াবে চারদিকে। তাদের এ ক্ষুদ্র অথচ মহৎ ও অনুকরণীয় উদ্যোগকে উৎসাহিত করণে সংশ্লিষ্টদের কৃপণতা, কুণ্ঠাবোধ, অবজ্ঞা জাতি হিসেবে হীনমন্যতার পরিচায়ক নয় কি?
উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন হলো আগামীতে এখানে গড়ে তোলা হবে শান্তিনিকেতনের মতো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুধু দেশবাসী নয় বিশ্বের অনেক দেশ থেকেই পর্যটকরা আসবেন এটা দেখতে। সারা বাংলায় জিন্দাপার্কের আদলে গড়ে উঠবে অনেকগুলো ইকোপার্ক। রোল মডেল হবে এই ইকোপার্কটি। স্বপ্নপিপাসু জনউদ্যোগে নির্মিত এই ব্যতিক্রমী সামাজিক স্থাপনাটির অস্তিত্ব রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। ধ্যানস্থ প্রকৃতির এই অসম্ভব গাম্ভীর্যতা কতিপয় স্বার্থান্ধ মনের কদর্যতা ও সীমাহীন লোভে লালায়িত স্বার্থান্ধ ভূমিদস্যু সরকারের একশ্রেণীর পরজীবী আমলা এটাকে ধ্বংসের পায়তারা শুরু করেছেন।
কেন রাজউক কর্তৃপক্ষের কোপানলে পুড়ছে এই পার্কটি? এটিকে শকুনের ভাগাড়ে রূপান্তরের অপচেষ্টা চলছে বলেই পরিবেশবাদীদের অভিমত। তাদের শঙ্কিত অভিমত এক দশকের মধ্যেই হয়ত সেখানে বহুতল ভবন গড়ে উঠবে, জনাকীর্ন হবে সেইসব এলাকা। চারদেয়ালে বন্দি শিশু-কিশোরের মন আটকে থাকবে বইয়ের পাতায় টিভি-কম্পিউটারের মনিটরে। যুবরা একসাথে হাটবে না, দৌঁড়াবে না, সাতার কাটবে না পুকুরে।
জিমে গিয়ে এসিরুমে ঢুকে হয়তো হাত-পা ছড়িয়ে শরীর জুড়াবে। কিন্তু তাতে করে কি শরীর মনের স্বাভাবিক বিকাশ ঘটবে? ইট-পাথরের মতই মানুষের মন হবে নিরস, নির্জীব। হয়তো তখন আত্মকেন্দ্রিক তথাকথিত চিত্তবিনোদনের জন্য প্রধান মাধ্যমই হবে সোস্যাল নেটওয়ার্ক।
বর্তমানে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অধীন জিন্দাপার্কটির তত্ত্বাবধান করছে অগ্রপথিক-পল্লী সমিতি। যদিও রাজউক তার কৌশল প্রয়োগ করে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে তৎপর ও অনড় ছিল। কিন্তু স্থানীয়দের জোটবদ্ধ প্রতিবাদ আর প্রতিরোধের ধোপে টিকতে না পেরে মালিকানার স্বত্ত্ব নিয়ে ‘অগ্রপথিক-পল্লী সমিতিকে উক্ত জিন্দাপার্কটির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে মৌখিক ঘোষণা দিয়ে রাজউক পিছু হটে।
এমনিতেই ঢাকা শহরে খোলামেলা জায়গার অভাব রয়েছে প্রচুর। পরিবার পরিজন সন্তানাদি নিয়ে অবসর সময় কাটানোর মত বিনোদনকেন্দ্রের বড় অভাব। শুদ্ধ হাওয়ায় প্রাণখুলে বুকভরা নিশ্বাস নেওয়া যাবে এমন অবস্থা নেই এখানে। ক্রমশঃ জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই রাজধানীর বাতাসে নিঃসৃত কার্বন ডাইঅক্সাইড আর সিসার স্তরকে পরিশোধন করতে গাছের কোনো বিকল্প নেই। অথচ রাজধানী ঢাকায় গাছের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বলধা গার্ডেন, পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়; রমনা পার্ক ছাড়া খুব একটা গাছগাছালীর দেখা পাওয়া যায় না। যারা সংগঠনটির হাল ধরে আছেন তাদের আশা ছিল তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ন হবেন। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে ব্যয় নির্বাহের জন্য। পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণে নেওয়া হবে বিশেষ ব্যবস্থা।
পার্কটির ভেতরে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে নেওয়া হবে পর্যাপ্ত উদ্যোগ। কুমিল্লার বার্ড এর মতো এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্মিয়মান আন্তর্জাতিক মানের মিলনায়তনে আসবেন গোটা বিশ্বের লোকজন, অনুষ্ঠিত হবে সভা সেমিনার। দুর্ভাগ্য যে সামাজিক এই উদ্যোগে বাগড়া দিয়ে এটিকে ধুলিস্যাৎ করতে মাঠে নামে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি।
দেখাশোনা করার জন্য ১৮ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। যাদের কোনো বাড়তি চাওয়া নেই। পার্কটি থেকে তারা আর্থিক বা বস্তুগত কোনো লাভ চান না। নিছক জনগণের সেবার জন্য, নির্মল আনন্দদান আর মানুষের মনের সুপ্ত ও সৃজনশীলতার ভ্রুণকে প্রস্ফুটিত করে ফলবতী করে তোলাই তাদের প্রয়াস।
সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়ন তথা পল্লীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মডেল স্থাপন করাই হল তাদের লক্ষ্য। চাকরির পেছনে ছুটে সময় ও অর্থ অপচয় না করে যুব সম্প্রদায় তাদের নিজ নিজ এলাকায় এধরনের উদ্যোগ নিয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, সৃজনশীল চিন্তার বিকাশ, পাঠক সমাজ গঠন-এ জাতীয় মহৎ কিছু উদ্দেশ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করে সমাজ বিনির্মানের সৈনিক হতে পারেন।
এজন্য তারা সদাশয় সরকারের কাছ থেকে পৃষ্ঠপোষকতা, ব্যাংক ঋণের সুবিধাসহ পার্কটির স্থায়ী বন্দোবস্ত দাবি করেন। শুধুমাত্র মৌখিক নির্দেশনায় তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব পাওয়ায় সন্তুষ্ট নন তারা। তাদের আশংকা যেকোনো সময় রাজউক কর্তৃপক্ষ আবারও তাদের উচ্ছেদের পায়তারা করতে পারে। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সবার নজর পড়বে এই পার্কটির উপর। ধনাঢ্য পুঁজিপতি ব্যবসায়ী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান পার্কটির দখল নেওয়ার জন্য তদবির চালাচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। তাই তাদের দাবি হলো দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া যেখানে পার্কটি পরিচালনার জন্য অগ্রপথিক- পল্লী সমিতিকে স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া হয়।
আন্দোলনের ফল দাঁড়ায় সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে সেসময়ে জিন্দাপার্ক রক্ষা ও উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সাবেক মন্ত্রী, সাবেক ভিসি, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, পরিবেশবিদ সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক ব্যবসায়ী এমনকি শাসকদলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। রাজউকের কতিপয় অত্যুৎসাহী আমলার যোগসাজশে বেআইনিভাবে জিন্দাপার্কটিকে ভিন্ন নামে নামকরণ করে পার্কটির তত্ত্বাবধানকারীদের অবৈধ দখলদার বলে উচ্ছেদের নোটিশ দেয়া হয়েছিলো।
ঘটনার পরম্পরায় রাজউক চেয়ারম্যান উক্ত পার্কটি পরিদর্শন করে জনসম্মুখে প্রতিশ্রুতি দেন যে জিন্দাপার্ক কমপেক্সটির সামাজিক ও প্রাকৃতিক সকল উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনায় অর্থায়নে, উন্নয়নে পরিচালনায় ও তত্ত্বাবধানে একমাত্র স্বত্বাধিকারীর দায়িত্ব পালন করবে অগ্রপথিক- পল্লী সমিতি। পরবর্তীতে সমঝোতা স্মারক তৈরীর কথা থাকলেও অদ্যাবধি সেটা করা হয়নি।
যার কারণে ওই পার্কটির কর্ণধাররা উচ্ছেদ আতংকে আছেন। তাদের দাবি হলো পার্কটি পরিচালনায় সমস্ত দায় দায়িত্ব যেনো তাদের উপর বর্তায়। এ রাষ্ট্র যে ধনিক বা বণিকদের হাতের মুঠোয় জিম্মি নয় সেটা প্রমাণ করবার সময় এসেছে। সংঘবদ্ধ জন আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি নমনীয় থেকে পার্ক সংশ্লিষ্ট সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠানের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে মানবিক সরকার বলে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার এটাই মোক্ষম মুহুর্ত। দেশবাসী তাকিয়ে আছে সরকার কার পক্ষে দাঁড়ায়? সরকার কার পুঁজিপতি, ব্যবসায়ী না আমজনতার- সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)