আগামী ২০২১-২০১২ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময়ে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলে আশা করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২১-২০১২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনে এই তথ্য জানান তিনি।
তবে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক এক পূর্বাভাষে বলেছিল, আগামী ২০২১-২০১২ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। পরের বছর তা বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।
কিন্তু বিশ্বব্যাংকের এই ধারণাকে উড়িয়ে দিয়ে অর্থমন্ত্রী আগামী বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করেছেন ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবেলায় জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করার বিষয়টি এ বাজেটে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করার চেষ্টা করেছি।
বিগত এক দশকে বাংলাদেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে করোনার কারণে তা হ্রাস পেয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কোভিড-১৯ এর প্রভাব হতে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার হবে ধরে নিয়ে চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু এ মহামারির প্রস্তাব দীর্ঘতর হওয়া এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং পুনরায় লকডাউন ঘোষণার কারণে অর্থনেতিক কর্মকাণ্ডে শ্ৰথ অবস্থা বিরাজমান এবং রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে কাঙ্খিত গতি ফিরে পায়নি।
তবে প্রবাসী আয়ে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়া এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকার ঘোষিত বৃহৎ প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের বিষয়গুলো বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরবর্তী উত্তরণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আগামী ২০২১-২০১২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলে আশা করছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মধ্যমেয়াদে আমাদের প্রবৃদ্ধির প্রধান উৎস হলো শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধিতে ভোগ ও বিনিয়োগ এবং বহিঃস্থ চাহিদা বৃদ্ধিতে রপ্তানি হবে আমাদের মনোযোগের ক্ষেত্র। প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি মধ্যমেয়াদেও অব্যাহত থাকবে। সরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। অন্যদিকে সরবরাহের দিক থেকে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর মাধ্যমে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুতগতিতে বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্ধারিত জিডিপির এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।