চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: সড়কে নিয়ন্ত্রণহীন গতি কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং আসবেন সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। সারাবছর যেমনই থাকুক না কেনো একমাস আগে থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঘষামাঝা শুরু। অল্প সময়ে চীনা প্রেসিডেন্টকে স্মৃতিসৌধে পৌছাতে তুলে ফেলা হয় মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ সব স্পিডব্রেকার। এক সঙ্গে তুলে ফেলা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের তিনটি গুরত্বপূর্ণ জায়গা ডেইরি, প্রান্তিক, এমিএইচ গেইটের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের স্পিড ব্রেকার।

চীনা প্রেসিডেন্ট সাড়ে ২২ ঘণ্টা বাংলাদেশ সফরের পর ঢাকা ত্যাগ করলেও রাস্তায় আর পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিংবা উদ্যোগ নেওয়া হলেও স্পিডব্রেকার পুনঃস্থাপন করা হয়নি।

শুধু চীনা প্রেসিডেন্টই নয় প্রায় সময় এই ব্যস্ততম মহাসড়ক দিয়ে নবীনগর স্মৃতিসৌধে প্রায়ই ভিভিআইপি ও ভিআইপিরা চলাচল করে। তাদের গাড়িও চলে সাধারণ গাড়ি থেকে কয়েকগুণ বেশি ও বেপরোয়া গতিতে। তখন আটকিয়ে দেয়া হয় সাধারণ যান চলাচলও। ফলে স্পিডব্রেকার না থাকার ফলে জায়গাগুলোতে ঘটে চলেছে নানান দুর্ঘটনা। ভিআইপিদের সময়ের মূল্যের কাছে সাধারণ মানুষের জীবনের মূল্য দিতে হয়েছে।

গত ২৩ নভেম্বর (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেইটে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আরমান হোসেন নামে এক ভ্যান চালক নিহত ও কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। প্রান্তিক গেটের সামনে বেপরোয়াভাবে অতিক্রম করার সময় একটি ভ্যানকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালকের মৃত্যু ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে স্পিডব্রেকার পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়ে আসলেও নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। ফলে তারই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার ভোরে এমএইচ গেইটের সামনে বাসচাপায় প্রাণ দিতে হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর। এভাবে আর কত প্রাণ ঝরবে?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও একজন শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। সারাদেশেই সড়কে প্রাণ যাচ্ছে। ব্যস্ততম ঢাকা-আরিচা রোডের পাশে অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আরিচা রোডের বেপরোয়া যানের চাকায় প্রায়ই পিষ্ট হচ্ছে অথচ এর কোনো প্রতিকার নেই। আন্দোলনের মুখে স্পিডব্রেকার বসানো হলেও স্মৃতিসৌধে ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের চলাচলের কারণে তা আবার উঠিয়ে নেওয়া হয়। ফলে অবস্থা তথৈবচ। আবার এটা নিয়ে আন্দোলন করতে গেলেও গণগ্রেফতারের শিকার হতে হয়। আন্দোলনের নামে ভাঙচুর যেমন কাম্য নয়, তেমনি আন্দোলন থামানোর জন্য গণগ্রেফতারও বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল বন্ধ করাও কোন স্থায়ী সমাধান নয়।

সবার আগে প্রয়োজন সড়কে নিরাপত্তা। আর যেন কোনো প্রাণ ঝরে না যায় যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে। আর দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ যেনো অব্যাহত থাকে।