জাল মুদ্রা তৈরি ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িত লিয়াকতকে গ্রেপ্তার করলেও তার গুরু ছগিরের এখনো দেখা পায়নি র্যাব। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছগিরকে খুঁজছেন তারা, তাকে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
‘দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ দেশি বিদেশি জাল মুদ্রা তৈরি ও জাল মুদ্রা বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িত আসামি লিয়াকত, মূলত রাজধানীর মিরপুর এলাকায় তার গুরু ছগির মাস্টারের কাছ থেকেই জাল মুদ্রা তৈরির দীক্ষা নেয় লিয়াকত।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান।
লিয়াকতের গুরু ছগির সম্পর্কে এমরানুল হাসান বলেন, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় তার গুরু ছগির মাস্টারের কাছ থেকেই জাল মুদ্রা তৈরির দীক্ষা নেয় লিয়াকত। ছগির মাস্টার ১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজার ধসের পর আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
‘শেয়ারবাজার ধসের পর জাল মুদ্রা তৈরির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন তিনি। ছগির মাস্টারের সহযোগী হিসেবে লিয়াকত এই চক্রের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। গত দশ বছর ধরে কেরানীগঞ্জে নিজের ভাড়া বাসাতেই জাল মুদ্রা তৈরি শুরু করেন লিয়াকত। সে নিজেই গড়ে তুলে অন্য একটি সিন্ডিকেট’ বলেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক।
লিয়াকতের গুরু ছগিরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এমরানুল হাসান বলেন, ছগিরের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে তথ্য নেই। লিয়াকতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তার দেয়া তথ্যমতে আমরা ছগিরের সন্ধান শুরু করেছি। ছগিরকে গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করেছে।
বুধবার দিনগত রাত তিনটায় রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা উত্তরপাড়ার একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় জাল মুদ্রার বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসসহ জাল মুদ্রা তৈরির মূল হোতা লিয়াকত আলীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। পরে লিয়াকতের দেওয়া তথ্যে খিলগাঁও থেকে তার অন্যতম সহযোগী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই সময় আসামীদের কাছ থেকে ভারতীয় জাল ১০ লাখ রূপী, জাল রূপী তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, ভারতীয় মুদ্রায় ব্যবহৃত ছয়টি স্কীন ডাইস, দুটি ডাইস প্লেট, দুটি স্ক্যানার কাম প্রিন্টার, ৪টি প্রিন্টার, ৭টি জাল রূপী তৈরীর নিরাপত্তা সুতা, ৪টি জাল রূপী কাটার মেশিন, ৭টি বক্স কাটার ব্লেড, রূপী ছাপানোর ৫টি স্কীন রাবার, ১২০টি বিদেশী উন্নত মানের কালিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।