চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জার্মানিতে ৩৩ বছরের ক্যারিয়ার শেষ করলেন ড. গোলাম আবু জাকারিয়া

জার্মানিতে দীর্ঘ ৩৩ বছরের সফল ক্যারিয়ার শেষ করলেন চিকিৎসা পদার্থবিদ (মেডিক্যাল ফিজিসিস্ট) অধ্যাপক ড. গোলাম আবু জাকারিয়া। জার্মানি থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে সেখানেই চিকিৎসা পদার্থবিদ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিলেন তিনি। অবশেষে ক্রেইসক্রানকেনহাস গ্যুমারসবাখ থেকে অবসর নিলেন রেডিওথেরাপি বিষয়ে অভিজ্ঞ ড. গোলাম আবু জাকারিয়া।

বাংলাদেশে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক শেষ করেন তিনি। দেশের জন্য যেন কিছু করতে পারবেন-বাবা-মায়ের এমন চিন্তা এবং অনুরোধেই প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। কিন্তু কোন বিষয় যেখান থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়, তার প্রতি ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ ছিল তার। বিশেষ করে গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। ‘‘ঘটনার পেছনে যুক্তি’’ এই বিষয়টিকেই তিনি বেশি পছন্দ করতেন বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসা পদার্থবিদ।

এরপর তিনি জার্মানির হ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পান। অবশেষে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অভিযাত্রা। তিনি বলেন, আমি এখনো কৃতজ্ঞ যে, কবি এবং চিন্তাবিদদের ভূমিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। হ্যালি থেকে পদার্থবিদ্যায় পড়া শেষ করে গোটিনজেন ইউনিভার্সিটিতে চিকিৎসা পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করি। এরপর হেইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করি।

এরপর জার্মানিতেই চিকিৎসা পদার্থবিদ্যার ওপর ক্যারিয়ার গড়েছেন তিনি, সফলও হয়েছেন৷ তবে শুধু জার্মানিতে এই বিষয়ে চাকরি করেই ক্ষান্ত হননি তিনি৷ বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েও চালু করেছেন চিকিৎসা পদার্থবিদ্যার বিভাগ৷ তিনি চান, তার মাতৃভূমিতে ক্যানসার নিরাময়ে রেডিওথেরাপির ব্যবহার সহজলভ্য হোক৷

জার্মানিতে নিজের কেরিয়ার গড়ার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যকে জার্মানদের কাছে পরিচিত করতে উদ্যোগী হয়েছেন এই প্রফেসর৷ তার সংগঠন ‘বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্র’ একাধিক বাঙালি কবি সাহিত্যিকের উপর জার্মান ভাষায় বই প্রকাশ করেছে৷ এছাড়া বাংলাদেশে একাধিক স্কুল এবং চিকিৎসালয়ও গড়েছেন তিনি৷ মানবসেবায়ই অবসর কাটে দেশপ্রেমি এই মানুষটির।

জার্মানিতে ক্যারিয়ার শেষ করার পর এখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের দিকে মনযোগ দিবেন এই সফল পদার্থবিদ। বিশেষ করে নেপাল, ভুটান, শ্রিলংকা এবং আফগানিস্তানের দিকে। ড. গোলাম আবু জাকারিয়া বলেন, এসব দেশে ক্যানসারের চিকিৎসা খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং তারা প্রধানত কেমোথেরাপির ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনাই তার আগামী বছরগুলোর ইচ্ছে।

এছাড়াও তিনি আফ্রিকা মহাদেশের রুয়ান্ডা এবং তানজানিয়াতে কাজ করতে চান। সবকিছুর পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তার এই সফলতাসহ সবকিছুর জন্য পরিবারের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সফল এই মানুষটি।