ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির কার্যালয়ে ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী ডাকা ধর্মঘট কর্মসূচির অংশ হিসেবে পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট পালন করছে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা।
সোমবার সকাল থেকে ‘প্রগতিশীল ছাত্রজোট’ ব্যানারে চার দফা দাবিতে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে তারা। দাবি না মানা হলে দুপুর দুইটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানান জোটের নেতা-কর্মীরা।
তাদের চার দফার দাবিসমূহ হচ্ছে- গত ২৩ জানুয়ারি ঢাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার, গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের সঙ্গে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও মামলা প্রত্যাহার, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় প্রশাসনকে বহন করা এবং অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকেই জোটের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলোর সামনে অবস্থান নিতে থাকেন। একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অনুষদগুলোর প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় তারা। ফলে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে অনুষদ ভবনের ফিরে যেতে হয়েছে। তবে ফাইনাল পরীক্ষাসমূহ ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকায় চারটি বিভাগের নির্ধারিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবন, পুরাতন কলা ভবন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবন এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবনের প্রধান ফটক আটকে অবস্থান নিয়েছেন তারা। ফলে অধিকাংশ বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
প্রগতিশীল জোটের সমন্বয়ক ও ছাত্রফ্রন্ট জাবি সংসদের সভাপতি মাসুক হেলাল অনিক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ চার দফা দাবিতে আামাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। তবে আমাদের পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষাসমূহ আওতামুক্ত থাকায় এই ব্যাপারে বিশেষ ছাড় দিয়েছি।
উল্লেখ্য, রাজধানীর সাত কলেজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের উত্যক্ত ও নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। নিপীড়নের শাস্তির দাবিতে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। অবরুদ্ধকারীদের ওপর ‘হামলা চালিয়ে’ উপাচার্যকে উদ্ধার করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এর প্রতিবাদে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ডাকে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।