জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করতে অ্যাপসভিত্তিক সাইকেল শেয়ারিং সেবা চালু করছে ‘জোবাইক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এ ধরনের সেবা চালু থাকলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী খাঁন হেলালউজ্জামান অয়ন।
পরীক্ষামূলকভাবে জানুয়ারি মাস থেকে ১০-২০টি সাইকেল নিয়ে ‘জোবাইক’ কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এরপর ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সাইকেল সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
হেলালউজ্জামান জানান, ব্যবহারকারীরা তাদের স্মার্টফোনে জোবাইকের অ্যাপ ইনস্টল করে সেবাটি গ্রহণ করতে পারবেন। পাশাপাশি অ্যাকাউন্টে থাকতে হবে জোক্রেডিট ব্যালেন্স। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিদ্যমান যাতায়াত ব্যবস্থার যে সঙ্কট রয়েছে তা সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি কথা বলে একটি জরিপ করেছি। জরিপে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মনে হয়েছে, এক হল থেকে অন্য হলে এবং হল থেকে ক্লাসে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যানবাহন সহজলভ্য করতে সাইকেল শেয়ারিং সেবা কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য (ছেলে মেয়ে উভয়) এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে, তারা সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনে রাতদিন ২৪ ঘণ্টাই ক্যাম্পাসের ভেতরে সেবাটি পাবেন।’
পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগও তৈরি হবে।
জোবাইকের সেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সময়ের উপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীদের ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি ৫ মিনিট ৩ টাকা হারে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে স্থান ভেদে ব্যয়ের হারে ভিন্নতা থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে সাইকেলের লক খোলার সাথে সাথে সময় গণনা শুরু হবে এবং নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানোর পরে ব্যবহারকারী যখন সাইকেলটি ষ্ট্যান্ড করে পুনরায় লক করবেন তখন সময় গণনা শেষ হবে বলে জানান জোবাইকের নির্বাহী পরিচালক।
জোবাইকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হলগেটে সাইকেল রাখা থাকবে। একইভাবে বটতলা, ডেইরি গেইট অথবা প্রান্তিক গেইটেও কিছু সাইকেল স্ট্যান্ড করা থাকবে। যাত্রীরা ইচ্ছামতো একটা সাইকেল নিয়ে বারকোড স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে আনলক করে সাইকেল নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে চলে যাবেন।
সাইকেলগুলো হবে অনেকটা ডিজিটাল বাইসাইকেলের মতো। সাথে থাকবে অত্যাধুনিক লক, যেটা আনলক করতে হবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মাধ্যমে। অ্যাপ ডাউনলোড করে, অ্যাকাউন্ট খুলে, সাইকেলের সাথে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করে সাইকেলটি নিয়ে ইচ্ছেমত ক্যাম্পাসের যে কোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে।
অত্যাধুনিক এই সাইকেলে থাকবে সোলার প্যানেল ও জিপিএস সিস্টেম। এর মাধ্যমে যে কোন সাইকেলের অবস্থান জানা যাবে।