অবিলম্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা’সহ ১২ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস প্রতিনিধির একাংশ।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ’ অনুযায়ী উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ছাড়াও ১২ দফা দাবি জানান।
১২ দফার অন্যান্য দাবিসমূহ হচ্ছে: স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে পরবর্তী মেয়াদের উপাচার্য না আসা পর্যন্ত যে কোনো নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখা, জাকসুর পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সব মহলের সাথে আলোচনা এবং সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা, র্যাগিং নামক মানসিক ও শারীরিক অপসংস্কৃতি নির্মূল করা, গণরুম অপসংস্কৃতি বন্ধ করে আবাসন সমস্যার সমাধান করা, ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এছাড়াও এডহক, দৈনিক ও মাস্টাররোল ভিত্তিক নিয়োগ বন্ধ করা, বিশেষ বিবেচনায় বাসা বরাদ্দ বন্ধ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য সংরক্ষণ করে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলভাবে বহিরাগত এবং অযাচিত ও অনিরাপদ যানবাহন প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, সেশনজ্যামের অভিশাপ থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ক্যাম্পাসের পরিবেশ দূষণকারী দোকানপাট উচ্ছেদ করা এবং লাইব্রেরী ভবনের সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত শুরু করা।
এদিকে মানববন্ধন শেষে একই দাবিতে দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি হিসেবে সদ্য নির্বাচিত সিনেটররা। সংবাদ সম্মেলন থেকে দ্রুত উপাচার্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানানো হয়। এসময় সিনেটরবৃন্দের পক্ষে এক লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন: ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাসী, এ ধারা অনুসরণ করতে সবাই বদ্ধপরিকর এবং এই ধারা বাধাগ্রস্ত হলে তা প্রতিহত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন: ‘২৩ জানুয়ারি আমরা উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাত করে ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ সমুন্নত রাখার স্বার্থে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাসহ ১২ দফা দাবি পেশ করি। তিনি এ দাবিগুলো আমলে না নিয়ে দাবিগুলো সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করেন। এছাড়াও তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ১১(১) ও ১১(২) ধারার ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।’
জাকসু থেকে নির্বাচিত পাঁচজন প্রতিনিধির ভোট ছাড়াই উপাচার্য নির্বাচন বৈধ হবে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক উপাচার্য বলেন: ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জাকসু নির্বাচন দেয় না বলেইতো সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি থাকেনা। আমরা সবসময়ই জাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি এবং আজকের ১২দফাতেও জাকসুর দাবি আছে। তবে ছাত্র প্রতিনিধি না থাকলেও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতেছে বিধায় উপাচার্য নির্বাচন অবৈধ হবেনা।’