মাঠ ভর্তি তরুণ-তরুণী। গ্যালারিতেও তরুণ-তরুণীর ভেসে যাওয়া, রক গানের উচ্ছ্বাসে। শূন্যে দাঁড়িয়ে নয়, সুপরিসর মঞ্চে অল্টারনেটিভ রক ব্যান্ড দল শূন্য গাইছে রক ধারায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান। জয় বাংলা বাংলার জয়, হবে হবে নিশ্চয়’। ভোকাল এমিলের ‘গোধুলীর ওপারে’ শুরু হতেই অল্টারনেটিভ রকের ধাক্কায় টালমাটাল তারুণ্য।
গুলশান-বাড্ডা থেকে এসেছেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থি সালমান। প্রথমবার এসেছেন জয় বাংলা কনসার্টে। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি তো শুনলেন। এটির গীতিকার বা সুরকার কে? কোন সময়ের গান এটি?’ তিনি বলেন, মে বি ৭১ এর সময়কার গান। গানটি শুনেছি, খুব ভালো লাগে। গানটি কে লিখেছে বা সুর করেছে জানতে ইচ্ছা করে না? তরুণের নিঃসংকোচ উত্তর, গানটি শুনেছি। তবে কে লিখেছে বা সুর করেছে এতদিন জানতে ইচ্ছা করেনি। এখন ইচ্ছা করছে। জানতে চাই, জেনে নেব।
সন্ধ্যা নামার আগে পর্যন্ত তিনটি দল গান করে। পাওয়ার সার্জ, আর্বোভাইরাস এবং শূন্য। ‘মাগো ভাবনা কেন’ দিয়ে শুরু করা পাওয়ার সার্জ একে একে গায় ৬টি গান। নিজেদের ‘অপ্রস্তুত যুদ্ধ’ এর পাশাপাশি ছিল জেমসের ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ গানটিও। এরপর মঞ্চে আসে আর্বোভাইরাস। ভোকাল সুফির শুরু হয় আমরা করব জয়’ দিয়ে। পুরো আর্মি স্টেডিয়াম গলা মেলায় তার সাথে। ক্রমানুসারে আর্বোভাইরাস গায় ‘জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘শহর’, ‘ভেঙ্গে ফেলো’, ‘হারিয়ে যাও’, ‘ইশকুল’সহ মোট ৬টি গান। ২০০৭ সালে গঠিত অল্টারনেটিভ রক ব্যান্ড শূন্যও কাকতালীয় ভাবে পরিবেশনা করে ৬টি গান।
সব মিলিয়ে উপস্থিতির সংখ্যা কত হবে? প্রশ্ন মনে জাগতে আয়োজকদের একজন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন মিলিয়ে ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে।
মঞ্চের দৈত্যাকৃতি পর্দায় মাঝে মাঝে ভেসে উঠছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়কের মুখ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নানা আঙ্গিকের মুখচ্ছবি। রঙ্গিন অথবা সাদাকালো। সন্ধ্যার আগে ৩ দলের পরিবেশনা শেষে সাময়িক বিরতিতে দেখানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ইউনেস্কো বিজয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত অডিও ভিজ্যুয়াল। সরব তরুণ-তরুণীর দল অবাক নীরবতায় মনোযোগ দিয়ে দেখে বিজয়ের সংক্ষিপ্তসার। শেষ হেত বাজায় বিপুল করতালি। প্রমাণিত হয় তিনি সব ভাবেই আছেন বাংলাদেশের হৃদয়ে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
ছবি : সাকিব উল ইসলাম