বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন ইসলাম ধর্মের নামে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে, তখন আশার আলো দেখিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ১৩০ জনেরও বেশি ইমাম। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, লন্ডন ব্রিজে হামলাকারীদের জানাযায় অংশ নিতে এই ইমামরা অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এমন হামলার নিন্দা জানিয়ে তারা দেশ থেকে চরমপন্থীদের মূলোৎপাটনের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা তাদের সন্ত্রাসবিরোধী এমন দৃষ্টান্তমূলক ও বিরল সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাই। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়, ইসলাম সম্পর্কে যেসব ধর্মগুরু প্রকৃত জ্ঞান রাখেন তারা মনে করেন, চরমপন্থা ও সন্ত্রাস কখনোই ধর্মের শিক্ষা নয়। বরং নিরীহ মানুষদের খুন করা বিপথগামীদের কাজ এবং এই কাজ অত্যন্ত ঘৃণার। ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিকে কবর দেয়ার আগে তার জানাযা সম্পন্ন করতে হয়। একজন ইমাম বিশেষ এই নামাজ পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু এসব সন্ত্রাসী এতটাই ঘৃণিত যে, ইমামরা তাদের জানাযা পর্যন্ত পড়াননি। এটা তাদের জন্য অনেক বড় এবং উপযুক্ত শাস্তি বলেই স্বীকার করতে হবে। আমরা মনে করি, ঠাণ্ডা মাথার এই খুনিদের কৃতকর্ম ক্ষমার অযোগ্য। তাই নামাজে জানাযার মাধ্যমে ধর্মীয় রীতিনীতিতে তারা শেষকৃত্য পাওয়ার যোগ্য নয়। বিকৃত মস্তিস্কের এসব সন্ত্রাসীর নামাজে জানাযা হলে হামলায় নিহতদের পরিববারের সদস্যদের নিদারুণ কষ্ট ও দুঃখের এই সময়ে তা অমানবিক হত বলেই আমরা মনে করি। অবশ্য যুক্তরাজ্যেই এমনটা প্রথম নয়, বরং বাংলাদেশেও গুলশান হামলা থেকে শুরু করে সর্বশেষ চাঁপাইনবাবগঞ্জের জঙ্গি আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের লাশ তাদের পরিবার গ্রহণ করেনি। তাই বেওয়ারিশ হিসেবে তাদের লাশ দাফন করা হয়েছে। এমনকি এসব সন্ত্রাসীর কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের মা-বাবা জাতির কাছে করজোড়ে ক্ষমাও চেয়েছেন। মক্কা-মদিনার মসজিদের দায়িত্বশীল আলেমরা এখানে এসে দেশীয় আলেমদের সঙ্গে এসব ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে বক্তব্যয দিয়েছেন। তাই এসব ঘটনাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে নিয়ে তরুণ সমাজসহ সকল শ্রেণির মানুষকে শিক্ষা নিতে আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিলে বিপথগামীরা আর কাউকে জীবনের সুন্দর পথ থেকে ঘৃণা ও অন্ধকারের পথে নিয়ে যেতে পারবে না।