বাংলাদেশে এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা হকি এখন জর্জরিত আর্থিক সংকট এবং ঘরোয়া আসরের অনিয়মিত আয়োজনে। লিগ নিয়মিত আয়োজন না হওয়ায় খেলোয়াড়রা আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। লিগ আয়োজনের দাবিতে জাতীয় দলের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পও বর্জন করছেন তারা।
আশির দশকে ভারতীয় উপমহাদেশে হকি’র চিত্রটা ছিলো একেবারেই অন্যরকম। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম ছিলো না। জুম্মন লুসাই-জামাল হায়দারদের মতো লাল-সবুজের খেলোয়াড়রা তাল মিলিয়েছেন ভারত-পাকিস্তানের তারকাদের সঙ্গে। কিন্তু পরে ছন্দপতন। তারপরও ২০০৫’এ অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে দেশের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ২০০৬ ও ২০০৮ এ আরও চারটি শিরোপাসহ ২০১৩ তে ওয়ার্ল্ড হকি লিগে শক্তিশালী চীনের বিপক্ষে জয়।
তবে সাংগঠনিক সমস্যার সঙ্গে ঘরোয়া আসরের অনিয়মিত আয়োজনে স্থবির দেশের হকি চর্চা। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগের দাবিতে লিগ বর্জন করেছে চার ক্লাব। আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় দলের ক্যাম্প বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারকারা।
জাতীয় হকি দলের খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি বলেন, ফেডারেশনের বোঝা উচিত হকি প্লেয়ারররা খেলার জন্য উৎসাহ নিয়ে বসে আছে। তারা লীগ খেলবে, কোনো একটা টুর্নামেন্ট খেলবে, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলবে। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি আমাদের হকি’র, জানিনা অদূর ভবিষ্যতে কি হবে?
ফেডারেশন ও ক্লাবের মধ্যে বিরোধ মেটাতে পারেনি খোদ ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও। তাতেই ঝুলে গেছে ঢাকার লিগ। জিমি বলেন, গত দুই বছর যাবত কোনো লীগ হচ্ছে না। পাশাপাশি কোন লোকাল টুর্নামেন্টও হচ্ছে না যে প্লেয়াররা খেলবে।
খেলোয়াড়দের দাবিকে যৌক্তিক মানছে ফেডারেশনও। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ বলেন, সর্বদলের ব্যপারে আমরাও সহানুভূতিশীল। আমরা (হকি ফেডারেশন) একাধিকবার লীগ কমিটি মিটিং করেছি। তাদের দলবদল করার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছু ক্লাবের অসহযোগিতার জন্য কিন্তু আমরা দলবদল করতে পারিনি। এটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বাররা।
এ সপ্তাহের মধ্যেই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। এমনকি এরমধ্যে যদি ক্যাম্প বর্জন করা খেলোয়াড়রা ফিরে না আসেন তবে ২২ সার্ভিসেস খেলোয়াড় নিয়েই প্রস্তুতি চালিয়ে যাবে হকি ফেডারেশন।