জাতীয় বাজেটে কৃষিখাতের ভাগ এবারও কমছে। মোট বরাদ্দের আকার ও ভর্তুকির পরিমাণ থাকছে গতবারের মতোই। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক খামারিদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা তহবিল গঠন, পোল্ট্রি খাতে বিশেষ সহায়তাসহ পরিবর্তিত জলবায়ু প্রেক্ষাপটে নতুন দিক নির্দেশনার আশা করে আছেন কৃষক।
খাদ্যশস্য, সবজি কিংবা মাছ। সবক্ষেত্রেই উৎপাদনের টানা সাফল্য ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু জাতীয় বাজেটের সামগ্রিক আকারের তুলনায় কৃষির অংশ দিনে দিনে সংকুচিত হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতা এবারও। গতবার যখন মোট বাজেটের আকার ছিল ২ লাখ ২২ হাজার ৪’শ ৯১ কোটি টাকার। আর কৃষিতে বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার ৩’শ ৯৬ কোটি টাকা। এবার সেখানে বাজেটের আকার হচ্ছে তিন লাখ কোটি, কিন্তু কৃষির ভাগ থাকছে সেটুকুই অর্থাৎ ১২ হাজার ৪’শ ৬৪ কোটি টাকা।
উৎপাদনে সাফল্য থাকলেও কৃষকের জন্য চলতি অর্থবছর ছিল মার খাওয়ার বছর। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় ভারী হয়েছে তার সংকট। ঋণগ্রস্থ কৃষকের মাথায় চড়েছে মামলার বোঝা। যার জন্য নতুন বিবেচনা নিতে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।
বড় ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়নি, তাই টান পড়েনি খাদ্যশস্যে। এমনকি খাদ্যশস্য উৎপাদনে সাফল্য বাংলাদেশকে পৌছে দিয়েছে চাল রপ্তানীকারক দেশের তালিকায়। কিন্তু এর বিপরীতেই আছে ভারত থেকে আমদানি করা চালে বাজার সয়লাব হওয়ার তথ্য। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে চাল আমদানি হয়েছে ১১ লাখ ৯ হাজার টন। পরে আবার ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৩ লাখ ৩৪ হাজার টনের। আমদানির এই পরিমাণ গত অর্থবছরের দ্বিগুণেরও বেশি।
গত অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৭১ ভাগ কমেছে কৃষিঋণ বিতরণের হারও। গত জুলাই থেকে এপ্রিল, দশ মাসে এবার ঋণ বিতরণ হয়েছে ১২ হাজার ৩’শ ৬১ কোটি টাকার। গত অর্থবছরে এই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ১’শ ১০ কোটি টাকা।
আসন্ন বাজেটে কৃষি উপকরণে বিশেষ আর্থিক সহায়তা বা ভর্তুকির আকারও থাকছে গতবারের সমান অর্থাৎ ৯ হাজার কোটি টাকা। কৃষি গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিপর্যস্ত পোল্ট্রি খাত রক্ষায় বিশেষ সহায়তাসহ পরিবর্তিত কৃষি প্রেক্ষাপটে নতুন বরাদ্দ ও দিক নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে আছেন কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা।