জাতীয় পার্টির জাতীয় কাউন্সিল ৩০ নভেম্বরের পরিবর্তে ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের।
বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশনে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিএম কাদের।
এসময় তিনি বলেন: ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে আমরা রাজনীতি করবো। যারা বলেছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টি ভেঙে যাবে, তাদের ধারণা মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। বরং জাতীয় পার্টি আরো সুশৃংখল এবং শক্তিশালী হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে থাকবে।
পল্লীবন্ধুর অভাব হঠাৎ করেই পূরণ করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন: পল্লীবন্ধু ৩৬ বছর রাজনৈতিক জীবনের ২৭ বছরই ক্ষমতার বাইরে থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিবেদিত ছিলেন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে পল্লীবন্ধু আমরণ সংগ্রাম করেছেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক শূন্যতায় জাতীয় পার্টি আরো শক্তিশালী হয়ে, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের কর্মসূচি দিয়ে দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জাতীয় পার্টি আগামী দিনে রাজনীতির নিয়ামক এবং চালিকা শক্তি হয়ে থাকবে।
জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতাদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন: একটি সময়ে দেশের ছাত্র সংগঠনগুলো দল বা ব্যক্তির লেজুড়বৃত্তি ও লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছিলো। আর এ কারণেই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করেছিলেন।
ছাত্র সমাজকে উপদেশ দিয়ে তিনি বলেন: ছাত্র সমাজ যেন কারো লাঠিয়ালে পরিণত না হয়। ছাত্র সমাজকে প্রতিটি অন্যায় আর অসত্যের প্রতিবাদ করে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকতে হবে।
ছাত্র সমাজের প্রতি সততা ও ন্যায়ের সাথে রাজনীতি করতে আহ্বান জানিয়ে পার্টির এই শীর্ষ নেতা বলেন: রাজনীতি করতে অর্থের প্রয়োজন আছে। কিন্তু অর্থের জন্য রাজনীতি করা দূর্বৃত্তায়ন। জাতীয় পার্টির আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে, তাই জাতীয় ছাত্র সমাজকে আরো শক্তিশালী হতে হবে।
এসময় দলের মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন: জাতীয় পার্টি এখন সব ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত। ২০২৩ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি আরো শক্তিশালী হচ্ছে।
তিনি বলেন: জাতীয় পার্টির যে সব নেতাদের সন্তানরা জাতীয় ছাত্র সমাজ করছে না, সেই সব নেতারা কোনো নির্বাচনেই জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পাবে না।
রাঙ্গা বলেন: জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের অবস্থানে আছে। আমরা সরকারের সাথে এক সাথে নির্বাচন করেছি, তাই তাদের সাথে আমাদের একটা সুসম্পর্ক আছে। তাই বলে সরকার যা বলবে জাতীয় পার্টি তা করবেনা। জাতীয় পার্টি স্বচ্ছ বিরোধী দল হিসেবে বাংলাদেশে রাজনীতি করবে।
ছাত্র সামজের উদ্দেশে রাঙ্গা বলেন: এরশাদ ছিলেন একজন পরিস্কার মানুষ, তাই জাতীয় ছাত্র সমাজের সবাইকে পরিস্কার মানুষ হতে হবে।
জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মো. জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ফয়সাল দিদার দিপু’র উপস্থাপনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, অ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান আদেল, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাশ, অ্যাড. আব্দুল হামিদ ভাষানী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, যুগ্ম-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু প্রমুখ।